Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Lost Child

এক মাস পরে মায়ের কাছে নিখোঁজ ছেলে

স্টেশনে উদ্দেশ্যহীন ভাবে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে রেল পুলিশের সন্দেহ হয়। ছেলেটির কথাবার্তায় অসংলগ্নতা থাকায় রেল পুলিশ তাকে বহরমপুরের কাজি নজরুল ইসলাম শিশু আবাসে পাঠায়।

একমাস নিখোঁজ থাকার পর ঘরে ফিরল বাপি। সোমবার বিকেলে।

একমাস নিখোঁজ থাকার পর ঘরে ফিরল বাপি। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৮
Share: Save:

মানসিক ভারসাম্যহীন বছর ষোলোর ছেলে এক মাস আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। কী করবেন, ভেবে উঠতে পারছিলেন না আর্থ্রারাইটিস আক্রান্ত, হুইলচেয়ারে বন্দি মা। শেষমেশ পুলিশের সাহায্যে এবং এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্যের উদ্যোগে মুর্শিদাবাদের একটি হোম থেকে ছেলে বাপিকে সোমবার ফিরিয়ে আনলেন চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের দেশবন্ধু পল্লির বাসিন্দা উন্নতি বালা।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৩ মার্চ বাপি চুঁচুড়া স্টেশন থেকে হাওড়া-আজিমগঞ্জ ট্রেনে উঠে সোজা মুর্শিদাবাদে গিয়ে নামে। সেখানে স্টেশনে উদ্দেশ্যহীন ভাবে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে রেল পুলিশের সন্দেহ হয়। ছেলেটির কথাবার্তায় অসংলগ্নতা থাকায় রেল পুলিশ তাকে বহরমপুরের কাজি নজরুল ইসলাম শিশু আবাসে পাঠায়। ছেলেটির কথাবার্তা থেকেও সে যে ট্রেনে করে চলে গিয়েছিল, তা জানা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

এ দিকে, ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে উন্নতিদেবী দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। হুইলচেয়ার নিয়েই খোঁজাখুজি শুরু করে দেন। তাঁর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যেই বাপিই বড়। স্বামী অনেক দিন আগে মারা গিয়েছেন। কোথাও সন্ধান না-পেয়ে শেষমেষশ চুঁচুড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন উন্নতিদেবী। গত ২০ মার্চ থানা থেকে তিনি জানতে পারেন, বাপি মুর্শিদাবাদের একটি হোমে রয়েছে। সেখানকার ফোন নম্বরও তাঁকে দেওয়া হয়।

কিন্তু সেখানে যাবেন কী করে উন্নতিদেবী? কে সাহায্য করবেন? এগিয়ে আসেন কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অজয় মোহান্তি (কার্তিক)। তিনি কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। সরকারি নিয়মকানুন মেনে, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করেন। সোমবার সাতসকালে উন্নতিদেবীকে গাড়িতে চাপিয়ে পৌঁছে যান মুর্শিদাবাদের ওই হোমে। বিকেলে বাপিকে নিয়ে তাঁরা দেশবন্ধু পল্লিতে ফেরেন। বোন ছুটে এসে দাদাকে জড়িয়ে ধরে ধরে। পাড়া-পড়শির ভিড় জমে।

উন্নতিদেবীর চোখে তখন আনন্দাশ্রু। তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলায় ছেলেকে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিছুতেই ও সুস্থ হল না। কী আর করা যাবে! কার্তিকবাবু না থাকলে ছেলেকে ফিরে পেতাম না। ওঁর ঋণ কী করে শোধ করব জানি না।’’

মায়ের কোলে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে পেরে কার্তিকবাবুও খুশি। তিনি বলেন, ‘‘এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mentally Challanged Lost Child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE