Advertisement
১১ মে ২০২৪
গুপ্তিপাড়ায় গঙ্গাস্নানে নিষেধাজ্ঞা, শুরু নজরদারি
Crocodile

crocodile: কুমির, সাবধান

কুমির থাকার সম্ভাবনায় বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় সাধারণ মানুষকে গঙ্গায় নামতে নিষেধ করতে সোমবার প্রচার চালায় প্রশাসন।

ভেম্বর পূর্বস্থলীর সরডাঙায় গঙ্গার পাড়ে দেখা গিয়েছিল এই কুমিরটিকে। তারপর বিভিন্ন ঘাটে মাঝেমধ্যেই দেখা মিলছিল।

ভেম্বর পূর্বস্থলীর সরডাঙায় গঙ্গার পাড়ে দেখা গিয়েছিল এই কুমিরটিকে। তারপর বিভিন্ন ঘাটে মাঝেমধ্যেই দেখা মিলছিল। এটিই গুপ্তিপাড়ায় চলে আসতে পারে বলে মনে করছে বন দফতর। বনকর্মীরা জানান, সাধারণত দিনে তিন-চার কিলোমিটার জলপথ অতিক্রম করে কুমির। নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
গুপ্তিপাড়া শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৯:১২
Share: Save:

কিছু দিন ধরে কখনও তার দেখা মিলেছে মুর্শিদাবাদে, কখনও নদিয়ার শান্তিপুরে বা পূর্ব বর্ধমানে। এ বার কুমির আতঙ্ক হুগলিতেও।

কুমির থাকার সম্ভাবনায় বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় সাধারণ মানুষকে গঙ্গায় নামতে নিষেধ করতে সোমবার প্রচার চালায় প্রশাসন। বন দফতরের কর্মীরা নজরদারি চালান। কিন্তু দিনভর এখানে কুমিরের দেখা মেলেনি।

প্রশাসনের আধিকারিকদের আবেদন, এই এলাকায় আপাতত গঙ্গাস্নান থেকে যেন সবাই বিরত থাকেন। কুমির নিয়ে আতঙ্কিত গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দারা। হগলির রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় জানান, স্থানীয় ভাবে কুমির দেখা গিয়েছে বলে খবর পাওয়ার পরেই দফতরের কর্মীরা গুপ্তিপাড়ায় যান। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে লোকজনকে সতর্ক করা হয়। গঙ্গাপাড়ে নজরদারি চালানো হয়। তবে, কুমির দেখা যায়নি। পাড়ে কুমিরের পা অথবা লেজের ছাপও চোখে পড়েনি। নজরদারি চলবে বলে তিনি জানান।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ক’দিন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-সহ কিছু এলাকায় গঙ্গায় কুমির দেখা গিয়েছে। রবিবার দেখা যায় কালনা ঘাটের কাছে। এর পরেই পার্শ্ববর্তী বলাগড় ব্লককে সতর্ক করেন বর্ধমান বন দফতরের আধিকরিকরা। ওই রাতেই বলাগড় ব্লক প্রশাসন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। জেলার বনকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। সোমবার সকাল থেকে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার করা হয়। কেউ যাতে স্নান করতে গঙ্গায় না নামেন, সে জন্য গুপ্তিপাড়ায় ঘাটে পুলিশের নজরদারিও ছিল। কুমির দেখার বাসনায় যাঁরা গঙ্গাপাড়ে গিয়েছেন, পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে। বিডিও নীলাদ্রি সরকার জানান, শুধু গুপ্তিপাড়া নয়, গোটা ব্লকেই মাইক প্রচার করা হচ্ছে।

গুপ্তিপাড়ার টোটোচালক গৌর কোলে এ দিন বলেন, ‘‘রবিবার বিকেলে গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটে যাত্রীদের অনেকেই বলছিলেন, কালনায় কুমির দেখা গিয়েছে। আজ পুলিশ কাউকে ঘাটে নামতে দেয়নি। এখানে কুমিরের কথা আগে কোনও দিন শুনিনি। এ তো ভয়ের ব্যাপার।’’

হাওড়ার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) রাজু সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে তিন ধরনের কুমির রয়েছে। নোনা জলের কুমির, মিষ্টি জলের কুমির এবং ঘড়িয়াল। যা তথ্য পেয়েছি, তাতে যতদূর সম্ভব এটা মিষ্টি জলের কুমির। তবে, হুগলিতে
এখনও দেখা যায়নি। আমাদের পর্যবেক্ষণ চলছে।’’

সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ বিশাল সাঁতরার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘খুব সম্ভবত, এটি ঘড়িয়াল। অন্য প্রজাতির কুমির হওয়ার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে এখানে নেই বললেই চলে।’’ বন দফতরের এক আধিকারিকও মনে করছেন, প্রাণীটি ঘড়িয়াল হওয়ার
সম্ভাবনাই বেশি।

বিশালের দাবি, কাটোয়ায় ঘড়িয়ালের বাস রয়েছে। তবে এ নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য নেই। এ নিয়ে বন দফতরের সমীক্ষা করা দরকার। এটি এখানকার পুরনো প্রজাতি, না কি উত্তরপ্রদেশের দিক থেকে কোনও ভাবে ভেসে এসে আটকে পড়া প্রজাতি, তাও দেখা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘ঘড়িয়াল মানুষ খায় না। মাছ খায়। এটিকে মাছখেকো কুমির বলা যেতে পারে। নদীর বাস্তুতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঘড়িয়াল। গঙ্গায় কল-কারখানা এবং শহরের যে বর্জ্য পড়ে, দূষণ রোধে তা যাতে শোধন করে ফেলা হয়, তা দেখা উচিত। তা হলে ঘড়িয়াল এবং আরও অনেক জলজ প্রাণী বাঁচতে পারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crocodile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE