রেল স্টেশন থেকে দূরত্ব সাকুল্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার। ফেরিঘাট থেকেও তাই। কিন্তু টোটো ‘অত দূর’ যায় না। কারণ, রাস্তা খারাপ। অতএব, বেশ কিছুটা রাস্তা হাঁটা ছাড়া গত্যন্তর নেই।
শুধু রাস্তাই নয়, অন্যান্য পরিকাঠামোও তথৈবচ। হুগলির প্রত্যন্ত জনপদ গুপ্তিপাড়ার বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির বছরভর কার্যত অনাদরে, অবহেলায় পড়ে থাকে বাংলার প্রথম বারোয়ারির গৌরব গায়ে মেখে! এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর পরিস্থিতির কোনও বদল হয় না। সেই ক্ষোভ নিয়েই ফের একবার বিন্ধ্যবাসিনী পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেবী জগদ্ধাত্রী এখানে ‘বিন্ধ্যবাসিনী’ নামেই পূজিত হন।
গ্রামের প্রবীণ মানুষেরা জানান, আগে পুজো হতো মূলত রাজবাড়ি, জমিদার বাড়ি বা বনেদি বাড়িতে। এই পুজোর প্রচলন ১১৬৮ সাল নাগাদ। ওই বছর গ্রামের ১২ জন যুবক একটি বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো পুজো দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও কারণে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর পরেই তাঁরা গ্রামে পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ! ওই বছরেই জগদ্ধাত্রী পুজো আরম্ভ করেন তাঁরা। ১২ জন বন্ধু অর্থাৎ ‘ইয়ার’ মিলে পুজো করায় সেই থেকেই ‘বারোয়ারি’ শব্দটির প্রচলন হয়। বাংলার সেই প্রথম বারোয়ারি বিন্ধ্যবাসিনীর পুজো আজও নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে হয়ে আসছে।