Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
বন্যা নিয়ে সতর্কতা জারি
Flooding of Arambagh

বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পে লাভের দিকে তাকিয়ে আরামবাগ

সেচকর্তা আরও জানান, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পের দু’দফায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বর্ধমানের দিকে বেগুয়া থেকে শেষ প্রান্ত খানাকুলের মাড়োখানা পঞ্চায়েতের পানশিউলি পর্যন্ত মোট ৩২ কিলোমিটারের পলি তুলে নাব্যতা বাড়ানো হয়েছে।

দ্বারকেশ্বর নদে জল বাড়ছে। মাইকে তারই প্রচার আরামবাগের কালীপুরে।

দ্বারকেশ্বর নদে জল বাড়ছে। মাইকে তারই প্রচার আরামবাগের কালীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০২
Share: Save:

প্রায় ফি বছর ডিভিসি-র ছাড়া জলে নদনদীর বাঁধ বা পাড় ভেঙে প্লাবিত হয় আরামবাগ মহকুমা। ঘরবাড়ি নষ্ট, প্রাণ ও শস্যহানির ঘটনা ঘটে। রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ডিভিসি তাদের বিভিন্ন জলাধার থেকে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। গোটা আরামবাগ মহকুমার জন্য বন্যা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এই অবস্থায় বিশ্বব্যাঙ্কের সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের পর প্রকল্পের সুফলের দিকে তাকিয়ে আরামবাগ মহকুমার মানুষ।

সোমবার বিকালে জেলাশাসক আরামবাগে মহকুমাশাসকের দফতরে এ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। ব্লকগুলি থেকে সতর্ক করে মাইকে প্রচারও শুরু হয়ে যায়।

সেচ দফতরের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘মুণ্ডেশ্বরী নদীর পলি তোলা এবং দুই নদনদীর (মুণ্ডেশ্বরী ও দামোদর) ভঙ্গুর বাঁধ বা পাড় মজবুত করা হয়েছে। মহকুমা অনেকটাই নিরাপদ। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক জল অনায়সে বয়ে নীচে রূপনারায়ণ নদে নামবে।’’

ওই সেচকর্তা আরও জানান, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পের দু’দফায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বর্ধমানের দিকে বেগুয়া থেকে শেষ প্রান্ত খানাকুলের মাড়োখানা পঞ্চায়েতের পানশিউলি পর্যন্ত মোট ৩২ কিলোমিটারের পলি তুলে নাব্যতা বাড়ানো হয়েছে। দামোদরের বাঁ দিকের বাঁধের ৩৯.২০ কিমির আমূল সংস্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া, মুণ্ডেশ্বরী থেকে বেরোনো খালগুলির পলি তোলা হয়েছে। খানাকুলের দু’টি ব্লকের দুর্বল নদীবাঁধগুলি বোল্ডার দিয়ে বাঁধা হয়েছে। সর্বোপরি, মুণ্ডেশ্বরীর জল রূপনারায়ণ নদে পড়ার মুখে মাড়োখানা গ্রাম পঞ্চায়েতে নদীর দু’পাড় (২ কিমি) মজবুত করে
বাঁধানো হয়েছে।

সেচ দফতর এবং মহকুমা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত ডিভিসি দফায় দফায় ২০ হাজার থেকে ৩২ হাজার কিউসেক করে জল ছাড়ায় ইতিমধ্যেই নদনদী অনেকটা ফুলে উঠেছে। ফের রবিবার রাতে ৫৫ হাজার কিউসেকের পর সোমবার ভোরেই তাদের পাঁচটি জলাধারের মধ্যে তেনুঘাট, পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে সব মিলিয়ে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে ডিভিসি। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যেই ওই জলের প্রভাব পড়বে মহকুমার দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীতে। প্রথম দফায় দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে ৭৭ হাজার ৯০০ কিউসেক জল মুণ্ডেশ্বরীতে পৌঁছবে আজ মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যেই। বুধবার সকাল নাগাদ পুরো ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক জলের চাপ ওই দুই নদনদীতে পড়বে। এর সঙ্গে মিশবে বৃষ্টির জল।

বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে হুগলি জেলায় প্রথম দফার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ২০২২ সালের গোড়ায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিলে। সেচ দফতর
থেকে জানা গিয়েছে, প্রায় ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের দ্বিতীয় দফার কাজগুলির সবই আরামবাগ মহকুমার ছিল। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE