গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে গোন্দলপাড়া ফেরিঘাট। —নিজস্ব চিত্র
বিদায়ী কাউন্সিলর হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় (তৃণমূল)। জয়ী হয়েছিলেন ১১৮৪ ভোটে। হারিয়েছিলেন প্রশান্ত মোদককে (সিপিএম)।
প্রায় সাড়ে তিন বছর হতে চলল পুরবোর্ড ভেঙেছে। চন্দননগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় এতদিন ধরে টানা জনসংযোগ চালিয়ে গিয়েছেন। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পুর পরিষেবা দিতে চেষ্টার কসুর করেননি। শুধু এলাকাবাসী নন, এ কথা মানছেন, যাঁকে হারিয়ে হিরন্ময় শেষবার কাউন্সিলর হয়েছিলেন, সিপিএমের সেই প্রশান্ত মোদক।
প্রশান্তের কথায়, ‘‘হিরণ্ময় অন্য দল করতে পারেন। তবে, তাঁর কাজের ধরন এবং কাজ করার ইচ্ছা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।’’
এ বারেও প্রার্থী হয়েছেন হিরণ্ময়। কিন্তু ‘কাজের লোক’ হলেও এ বারেও শিকে ছিঁড়বে কি না, প্রশ্ন থাকছেই। কারণ, এই ওয়ার্ডের মূল সমস্যা
গঙ্গার ভাঙন এখনও রোধ করা
যায়নি। ফেরিঘাট এবং পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া, জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ নিয়েও
প্রশ্ন রয়েছে।
এই ওয়ার্ডের লোকবসতি আশপাশের ওয়ার্ডগুলির তুলনায় কম। রাস্তাঘাট এবং নিকাশির তেমন সমস্যা নেই বললেই চলে। হিরণ্ময় ২০১০ সাল থেকে টানা দু’বার জিতেছেন। শেষ দফায় জিতে তিনি ৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান হন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ায় তিনি কাজ করার ক্ষমতা হারান।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা থেকে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা রাখার পাত্র দেওয়া হয়েছে। অথচ, যাঁরা ভাড়া থাকেন, তাঁদের দেওয়া হয়নি। গোন্দলপাড়া ফেরিঘাটে এখনও পাকা জেটি হয়নি। যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ভুটভুটি বা নৌকায় উঠতে হয়। বিনোদতলা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত গঙ্গার ভাঙনের সমস্যা কবে মিটবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।
গোন্দলপাড়ার রবীন্দ্রনাথ রোডের বাসিন্দা বীণাপাণি দাস বলেন, "গঙ্গার পাড়ে বসবাস করি। ভারী বর্ষা হলে বা গঙ্গায় জল বাড়লে আতঙ্কে ঘুম হয় না। মাঝেমধ্যে ঘুম থেকে উঠে পাড়ের দিকে দেখি। মনে হয়, এই বুঝি বাড়িটা গ্রাস করল গঙ্গা। ২০১৭ ও ২০২০ সালে শালবল্লা পুঁতে বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধানো হয়েছিল। তা রক্ষা হয়নি। সব তলিয়ে গিয়েছে।’’
পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার পরে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বিভিন্ন পরিষেবা দিতে ও সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের সঙ্গে সেতুবন্ধনের কাজ করেছেন হিরণ্ময়। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা, বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা— সবই করে গিয়েছেন ধারাবাহিক ভাবে। কিন্তু ভাঙন রোধের কাজ করে উঠতে পারেননি।
প্রশান্ত বলেন, ‘‘এলাকায় কেএমডিএ-র জলের প্রকল্প রয়েছে। গঙ্গায় ভাটার সময় ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হলে এলাকার নাগরিকরা জলের সমস্যায় পড়েন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy