E-Paper

বালককে অপহরণ করে খুনে যাবজ্জীবনের সাজা

উত্তম আনাজ বিক্রি করত। সে বিবাহিত। মেয়ে রয়েছে। উত্তমের বাবা-মা আদালতে এ দিন এসেছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করা হবে বলে আসামিপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ০৮:৩৩
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

প্রতিবেশী বালককে অপহরণের পরে খুনের দায়ে জনাইয়ের চিকরন্ড জলাপাড়ার যুবক উত্তম বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল শ্রীরামপুর আদালত। শুক্রবার এই রায় শোনান আদালতের প্রথম জেলা ও দায়রা বিচারক মনোজ কুমার রাই।

মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, ৩৬৪এ (অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া এবং মৃত্যুভয় দেখানো বা হত্যা করা) ধারায় বিচারক উত্তমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস হাজতবাসের নির্দেশ দেন। ৩০২ (খুন) ধারাতেও একই আদেশ দেন বিচারক। ২০১ (প্রমাণ লোপাট) ধারায় ৩ বছর কারাবাস, ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ড দেন তিনি। আদালতের নির্দেশ, জরিমানার টাকা উদ্ধার হলে তার অর্ধেক নিহত শুভ হালদারের পরিবারকে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ হিসাবে।

উত্তম আনাজ বিক্রি করত। সে বিবাহিত। মেয়ে রয়েছে। উত্তমের বাবা-মা আদালতে এ দিন এসেছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদন করা হবে বলে আসামিপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে।

মামলার তথ্যে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার মুখে টিউশন পড়ে ফিরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া শুভ। আর ফেরেনি। পরের দিন চণ্ডীতলা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় পরিবারের তরফে। তারা জানতে পারে, নিখোঁজ হওয়ার সন্ধ্যায় শুভকে দেখা গিয়েছিল উত্তমের সঙ্গে। উত্তম অবশ্য জানিয়েছিল, শুভ কোথায়, সে জানে না। পরের দিন এলাকা ছাড়ার পরে শুভর বাবা গোকুল দেবনাথের মোবাইলে এসএমএস করে উত্তম জানায়, এই কাজে (অপহরণ) তার আরও তিন সঙ্গী ছিল। পরে ফোনে মোটা টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় ওই টাকা নিয়ে যেতে বলে। চণ্ডীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গোকুল।

ঘটনার ৬ দিন পরে উত্তমের বাড়ির কাছে খড়ের গাদায় শুভর দেহ মেলে। গাইঘাটা থেকে উত্তমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য তিন অভিযুক্তও গ্রেফতার হন। পরে মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। উত্তমের ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ হয়। অন্য তিন জন কলকাতা হাই কোর্ট থেকে জামিন পান।

বুধবার বিচারক মনোজ কুমার রাই উত্তমকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। প্রমাণাভাবে অন্য তিন জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে আদালত।

জয়দীপ জানান, আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, অপহরণের পরেই জ্যাকেটের দড়ি গলায় পেঁচিয়ে শুভকে খুন করা হয়। শুভর গলায় ওই দড়ি মেলে। সেটি যে উত্তমেরই জ্যাকেটের, ফরেন্সিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়। অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে মোবাইলের যাবতীয় তথ্য, এসএমএস মুছে ফেলেছিল উত্তম। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাও পুনরুদ্ধার হয়।

গোকুলের বক্তব্য, উত্তমদের ধারণা হয়েছিল, তাঁর কাছে অনেক টাকা আছে। সেই কারণেই ওই কাণ্ড করা হয়। শুক্রবার গোকুল বলেন, ‘‘সাজা ঘোষণার রায়ে আমি খুশি। কিন্তু তিন জন বেকসুর খালাস পাওয়ায় খুশি নই। এ নিয়ে হাই কোর্টে যাব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Crime Serampore Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy