প্রায় ১০ কোটি টাকায় বৈদ্যবাটীতে দিল্লি রোডের দু’পাশে থাকা ২০০ বিঘার খাসজমিতে পুকুর খনন করে তেলাপিয়া মাছ চাষের প্রকল্প হতে চলেছে। কলকাতায় অনুষ্ঠিত সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এ নিয়ে তাদের সঙ্গে মৎস্য দফতরের একটি ‘মউ’ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈদ্যবাটী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। এতে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও দেখছে সব পক্ষ।
ওই সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। টাকা ঢালবে তারাই। জমি সরকারের। শুরুর এক বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। আধুনিক পদ্ধতিতে এখানে শুধু একলিঙ্গ (মোনোসেক্স) তেলাপিয়া (পুরুষ) মাছ চাষ করা হবে। এরা যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বেড়ে উঠতে পারে। পুকুরে মাছের সংখ্যা বেশি রেখেও চাষ করা যায়। চারা ছাড়ার চার মাসের মধ্যে ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের হয়ে যায়। মৎস্যপ্রেমীর কাছে এই তেলাপিয়া খুব পছন্দের। কাঁটা কম, নরম, সুস্বাদু।
সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাত্র বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের পুকুরগুলি মিষ্টি জলের মাছ (রুই, কাতলা, বাটা) চাষ করার অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। মৎস্যজীবীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। তবে, খুব সহজেই এইসব পুকুরে এই মাছ চাষ করা সম্ভব। এখান থেকে মাছ চাষিরা মাছের চারাও সহজেই নিতে পারবেন। বাজারে এই মাছের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। মৎস্যচাষিরা মোনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ করে বেশি লাভবান হতে পারবেন।’’
সমিতির আর এক সদস্য মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরা জানান, এমনিতেই পুরুষ তেলাপিয়ার বাড়বৃদ্ধির হার স্ত্রী তেলাপিয়ার থেকে ৩০-৩৫ শতাংশ বেশি।
বৈদ্যবাটী পুরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের জায়গা পুরসভার ৮, ১৪ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড এবং কিছুটা পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে। হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে এবং দিল্লি রোডের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে জায়গাটির অবস্থান। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রস্তাবিত জায়গাটি সরকারি খাসজমি।
পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘শহরে যে সব মাছচাষি আছেন, তাঁরা উপকৃত হবেন। তাতে, এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়বে। বেকার সমস্যা দূর হবে। এই সম্মেলনে সারা বাংলা জুড়ে, যে অর্থ বিনিয়োগ হবে তার কিছুটা সুফল শহরবাসী পাবেন। প্রস্তাবিত প্রকল্পে জমি নিয়ে কোনও জটিলতা থাকবে না।’’
৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর অভিজিৎ গুহ বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত জায়গার এখনও কোন জমি নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত হয়নি। এ নিয়ে পুরসভার তরফে বোর্ডের সদস্যদের কিছু জানানোও হয়নি। এই ধরনের সম্মেলনে ‘মউ’ স্বাক্ষর তো
অনেকেই হয়েছে। এখানে যদি খাসজমিতে কিছু হয়, আর তাতে এলাকার বেকার ছেলেরা কাজ পায়, তা হলে তো ভালই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)