অতীত: ক’দিন আগেও চলছিল মাটি কাটা। এখন বন্ধ। —নিজস্ব চিত্র।
রূপনারায়ণ নদের পাড়ে জেগে ওঠা চর কার ‘দখলে’ থাকবে, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলা প্রশাসনের মধ্যে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিষাদলের মায়াচরে রূপনারায়ণ নদের পাড় এলাকায় সরকারি জমি ‘দখল’ করে উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ করছিল হাওড়া জেলার রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। তা জানতে পেরেই ১০০ দিনের প্রকল্পে করা ওই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে মহিষাদলের অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন কিংবা ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে এর জন্য কোনও অনুমোদন নেয়নি হাওড়া জেলার ওই পঞ্চায়েত।
স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত বার্ড বলেন, ‘‘সোমবার সকালে আচমকা হাওড়া জেলার বেশ কয়েকজন শ্রমিক এসে কাজ করছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের সীমানায় তারা কাজ করছে কেন, জানতে চাইলে সদুত্তর পাইনি। তখন পঞ্চায়েতে খবর দিই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াচরের কমলপুরে সেতুর দক্ষিণ দিকে মাটি ফেলে রূপনারায়ণ নদের পাড় চওড়া করা হচ্ছিল। গত ৬ জানুয়ারি হাওড়া জেলার রাধাপুরের বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও আধিকারিক এসে একশো দিনের প্রকল্পের বোর্ড লাগানোর পর কাজ শুরু হয়েছিল। মহিষাদলের মায়াচর পূর্ব মেদিনীপুরের অন্তর্ভুক্ত হলেও এখানকার ভৌগোলিক পরিবেশ একটু আলাদা। কমলপুর হাটের পাশ দিয়েই একটি সরু খাল গিয়েছে। খালের উপর ছোট সেতু রয়েছে। যার এক প্রান্তে হাওড়ার রাধাপুর আর অন্যপ্রান্তে পূবর্ মেদিনীপুরের বাড় অমৃতবেড়িয়া পঞ্চায়েতের মায়াচর। সোমবার থেকে মায়াচরের প্রান্তে এসে মাটির বাঁধ দেওয়ার কাজ হচ্ছিল। কিন্তু তাঁদের না জানিয়ে হাওড়া জেলা প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ মেনে নিতে পারেনি স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় গ্রাম প্রধান মণিমালা প্রামাণিক বলেন, ‘‘স্থানীয় লোকজনের থেকে খবর পেয়ে ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। তারা সেখানে কী করতে চায়, তা জানার জন্য হাওড়া জেলার ওই পঞ্চায়েতকে আলোচনায় ডাকা হয়েছে।’’
দুই জেলার সীমানায় উন্নয়নের কাজ নিয়ে এমন টানাপড়েনে নড়ে চড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসনও। মহিষাদলের বিডিও জয়ন্ত কুমার দে বলেন, ‘‘এমন ঘটনা জানতাম না। গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে চাওয়া হয়েছে। তা জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে হাওড়ার শ্যামপুর-১ ব্লকের রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা যা কিছু করছি, তা আমাদের এলাকায়। অমৃতবেড়িয়া পঞ্চায়েতের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy