Advertisement
০৫ মে ২০২৪
কানাইপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে

ইস্তফা ১৩ সদস্যর

প্রধান দলের নির্দেশ মানেননি! হাত গুটিয়ে দলীয় নেতৃত্ব। প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগের রাস্তায় হাঁটলেন শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর পঞ্চায়েতের ১৩ জন তৃণমূল সদস্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০১:০৬
Share: Save:

প্রধান দলের নির্দেশ মানেননি! হাত গুটিয়ে দলীয় নেতৃত্ব। প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগের রাস্তায় হাঁটলেন শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর পঞ্চায়েতের ১৩ জন তৃণমূল সদস্য।

সোমবার দুপুরে বিডিও তমালবরণ ডাকুয়ার কাছে ইস্তফা জমা দেন তাঁরা। পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ৩০টি। তৃণমূলের ২১ এবং সিপিএমের ৯টি আসন। ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমে দাঁড়াবে আটটিতে। ফ‌লে পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে শাসক দল। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতটি সিপিএমের হাতে চলে যাবে। দলের নিচুতলার কর্মীরা বলছেন‌, কানাইপুর-সহ বিভিন্ন পঞ্চায়েতে দলের গোষ্ঠীকোন্দল বাগে আ‌নতে ব্যর্থ দলীয় নেতৃত্ব। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের ইন্ধনেই প্রধান ইস্তফা দেননি বলে অভিযোগ পদত্যাগী সদস্যদের।

বিডিও জানান, ১৩ জন সদস্য পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।

৩০ আসনের পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে তৃণমূল ২১টি আসনে জিতে বোর্ড গঠন করে। প্রধান হন কণিকা ঘোষ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দলের বেশ কিছু সদস্যের বনিবনা হচ্ছিল না। মাস দেড়েক আগে নানা অভিযোগে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ১৪ জন তৃণমূল সদস্য। গত ৬ ফেব্রুয়ারি দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন হুগলি জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রধানকে ফিরহাদ নির্দেশ দেন তিনি যেন উপপ্রধান নির্মলকুমার দাসের হাতে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব তুলে দেন। প্রধান দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরে নতুন প্রধান ঠিক করা হবে বলে জানানো হয়। ততদিন উপপ্রধানই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম পরিচালনা করবেন। বৈঠকের পরের দিন অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। দলের কথা মেনে ওই ১৪ জন তলবি সভায় যাননি। ফলে অনাস্থা বাতিল হয়।

ওই ঘটনার পর এক মাস কেটে গেলেও প্রধান নির্মলবাবুকে ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। বিক্ষুব্ধ দলীয় সদস্যরা একাধিক বার ফিরহাদ হাকিম এবং জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানান। প্রধান না সরলে ইস্তফা দেবেন বলেও সম্প্রতি নেতৃত্বকে চিঠি লেখেন তাঁরা। নির্মলবাবু বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ মেনে আমরা অনাস্থা থেকে পিছিয়ে আসি। অথচ প্রধান দলের নির্দেশ মানলেন না। দলের নেতারাও আমাদের এমএমএস বা চিঠির কোনও জবাব দেননি।’’

নির্মলবাবুর অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না থাকলেও বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের ইন্ধনে প্রধান স্বপদে থেকে রয়েছেন। প্রধানের দুর্নীতির দায় বিধায়ক এড়াতে পারেন না।’’ কণিকাদেবীর অবশ্য দাবি, দল তাঁকে আদপেই পদত্যাগের নির্দেশ দেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম উপপ্রধানের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে বলেছিলেন। সেটাই করছিলাম।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দল দু’পক্ষকে মিলেমিশে কাজ করতে বলেছিল। ওই তেরো জন কেন ইস্তফা দিলেন, জানি না।’’ বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছি, এমনটা প্রমাণ করতে পারলে আমি ইস্তফা দেব। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC members Resign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE