অপরাধ থেকে যানবাহন— সবেরই নিয়ন্ত্রণ এ বার অফিসে বসেই করবেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। কারণ শহর জুড়ে এ বার ১৫০টি ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। সেগুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভাবে যোগ থাকবে কমিশনারেট দফতরের। পুজোর আগেই ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে বলে সিটি পুলিশ সূত্রে খবর। এ ছাড়াও সিটি পুলিশ নিয়ে আসছে ক্যামেরা লাগানো আধুনিক মোবাইল ভ্যান এবং মোটরবাইক। সেগুলিও দিনভর শহরে ঘুরে ছবি তুলে সরাসরি পাঠিয়ে দেবে কমিশনারেটে।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের যে পাঁচটি শহরে কমিশনারেট রয়েছে, সেগুলিকে ‘স্মার্ট সিটি’ হিসেবে গড়তে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি পুলিশি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণেও টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যে ছ’টি পুলিশ কমিশনারেটের জন্য এই বরাদ্দ, সেগুলি হল— কলকাতা, হাওড়া, বিধাননগর, দুর্গাপুর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের দেওয়া ২০ কোটি টাকায় শহরে নজরদারি বাড়াতে পুলিশি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, পুজোর আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’
কমিশনার জানান, ১৫০টি ক্যামেরা বসাতে ইতিমধ্যে হাওড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে মোট ৬০টি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। ক্যামেরা বসাতে হাওড়া পুরসভা ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ জানিয়েছে, স্রেফ নজরদারি নয়, প্রতিদিনের ফুটেজ বিশ্লেষণেরও ব্যবস্থা হচ্ছে।
২০১১-র সেপ্টেম্বরে হাওড়ায় কমিশনারেট হওয়ার পরে শহরের কয়েকটি মাত্র গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসে। পুলিশের বক্তব্য, হাওড়ার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে অপরাধ দমন বা যান নিয়ন্ত্রণে ওই ক’টি ক্যামেরা পর্যাপ্ত ছিল না। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার মতে, তাই অন্য শহরের মতো হাওড়াকেও সিসি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য বালি হল্ট থেকে বটানিক্যাল গার্ডেন পর্যন্ত এলাকাকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। পুলিশ কমিশনার জানান, বালি হল্ট থেকে বটানিক্যাল পর্যন্ত ওই প্রতিটি অংশে স্থানীয় ভাবে একটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থাকছে। সেই কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকছে পুলিশ কমিশনারেটের।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বালি হল্ট থেকে বেলুড় মঠ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ২০টি ক্যামেরা বসে গিয়েছে। এই অংশের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বেলুড় মঠ ফাঁড়িতে। আবার বেলুড় মঠ থেকে মালিপাঁচঘরা পর্যন্ত যে অংশের ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রিত হবে মালিপাঁচঘরা থানা থেকে। পুলিশ কমিশনার আরও জানান, নবান্ন এলাকায় যে সব ক্যামেরা বসবে, তা নিয়ন্ত্রিত হবে নবান্নের অন্দর থেকেই।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘ক্যামেরা বসানো ছাড়াও আনা হচ্ছে ক্যামেরা লাগানো মোবাইল ভ্যান ও মোটরবাইক। সেগুলি দিনভর বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতির উপরে নজরদারি করার পাশাপাশি সরাসরি ছবি পাঠাবে পুলিশ কমিশনারেট অফিসে। আমরা অফিস থেকে বসেই গোটা শহরের ছবি দেখতে পাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy