Advertisement
২৯ মে ২০২৪
অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা

গাছ লুঠ, বেআইনি নির্মাণ আরামবাগে

ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে পূর্ত দফতরের রাস্তার ধারে গাছ লুঠের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু তাতে দাপট কমা দূরঅস্ত, উল্টে আরামবাগের নৈসরাইয়ের ওই দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এ বার পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ উঠল। গাছ লুঠে অভিযুক্ত মীর চঞ্চল ও জাকির খান নামে ওই দুই নেতার কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

পূর্ত দফতরের জায়গায় তৃণমূলের এই কার্যালয় ঘিরে বিতর্ক। ছবিটি তুলেছেন মোহন দাস।

পূর্ত দফতরের জায়গায় তৃণমূলের এই কার্যালয় ঘিরে বিতর্ক। ছবিটি তুলেছেন মোহন দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০২:১৯
Share: Save:

ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে পূর্ত দফতরের রাস্তার ধারে গাছ লুঠের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু তাতে দাপট কমা দূরঅস্ত, উল্টে আরামবাগের নৈসরাইয়ের ওই দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এ বার পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ উঠল। গাছ লুঠে অভিযুক্ত মীর চঞ্চল ও জাকির খান নামে ওই দুই নেতার কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

নৈসরাই বাসস্টপ লাগোয়া পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় তৈরির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহকুমা পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় সাত দিনের মধ্যে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার জন্য গত সোমবার নোটিসও পাঠিয়েছেন। কিন্তু সে সবের তোয়াক্কা না করেই বুধবার রাত থেকে তৃণমূলের দলীয় পতাকা-ফেস্টুনে মুড়ে দেওয়া হয়েছে নির্মিত ওই তৃণমূল কার্যালয়।

নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, “প্রায় ৩০০ বর্গফুট জায়গা দখল করে পাকা গাঁথনি এবং টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মাণ হয়েছে। নোটিসের তারিখ অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে তা না ভাঙলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে”

দলেরই দুই নেতার বিরুদ্ধে গাছ লুঠ ও সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণের মতো গুরুতর অভিযোগ প্রসঙ্গে আরামবাগ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বপন নন্দীর বক্তব্য, ‘‘ওটা কেউ ক্লাব-টাব করছে। দলীয় পতাকাগুলো সম্ভবত ভোটের সময় যে গুলো রাস্তায় ছিল সেগুলোই কেউ বেঁধেছে।” গাছ চুরি নিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।”

প্রসঙ্গত তিরোল পঞ্চায়েত এলাকার নৈসরাই দিয়ে আরামবাগ-বর্ধমান রাস্তায় গত মাস দুই ধরে গাছ চুরির ঘটনা ঘটছে। গত ১৭ জুলাই দিনদুপুরে নৈসরাই রাস্তার গায়ে অন্তত পাঁচ ফুট চওড়া একটি গাছ মীর চঞ্চল এবং জাকির খান দাঁড়িয়ে কাটান বলে অভিযোগ। মহকুমা পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। গাছটি স্থানীয় একটি শ’মিলে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

যদিও সরকারি স্তরে গাছ লুঠ ও সরকারি জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের ঘটনায় আদৌও কোনও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এলাকার মানুষই। স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, ক্রমাগত দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে চলেছে কিছু ছেলে। গাছ চুরি, পূর্ত দফতরের জায়গা দখল ছাড়াও বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে তোলা বাজি করছে। মারধর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। সমস্ত বিষয়টা দলের জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। নেত্রী দলের বিশৃঙ্খলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও আরামবাগের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অভিযুক্ত দুই নেতার অন্যতম মীর চঞ্চল অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে গাছ চুরি এবং পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ মিথ্যা। দলের ব্লক সভাপতিকে সব জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Party office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE