Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ছাত্র ছুরিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ৩

বেলুড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এক ছাত্র ছুরিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তিন জনই পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৯
Share: Save:

বেলুড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এক ছাত্র ছুরিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তিন জনই পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে। এ দিকে মঙ্গলবার অন্য ছাত্রদের থেকে অভিযোগ পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ পলাতক তিন ছাত্র-সহ চার জনকে কলেজ থেকে সাসপেন্ড করেছে। প্রশ্ন উঠেছে চতুর্থ ছাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা না করায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় শুভম শেখর নামে কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র কলেজের বাইরে একটি চায়ের দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, ওই সময়ে এক দল ছাত্র কলেজ থেকে বেরিয়ে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শুভম ও তাঁর সঙ্গীদের আক্রমণ করে। পুলিশ জানায়, শুভমকে রাস্তায় ফেলে লোহার রড দিয়ে মারা হয়। প্রাণে বাঁচতে পালাতে গেলে তাঁকে ধরে ফের মারধর করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে শুভমের শরীরে চার জায়গায় আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে অন্য ছাত্রেরা কলেজ থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁরা আহত শুভমকে প্রথমে টিএল জায়সবাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাতেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। এ দিন হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভমের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এ দিন কলেজের কয়েকশো ছাত্র সকাল থেকে ক্লাস বয়কট করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এর জেরে কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। কলেজের গেটে তালা দিয়ে কার্যত কলেজের দখল নিয়ে নেন ছাত্রেরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে চার জন ছাত্রের নামে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বহিষ্কারের দাবিও জানানো হয়।

এর পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরে অধ্যক্ষ অশোক কুমার বলেন, ‘‘ছাত্রদের থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে চার ছাত্রকে সাসপেণ্ড করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর, অভিযুক্ত ছাত্রদের বহিষ্কার করা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’

কিন্তু প্রশ্ন হল, কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ছাত্রদের হাতে লোহার রড, ধারালো অস্ত্র এল কী করে? কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন পুলিশের কাছে আগেই অভিযোগ জানালেন না?

অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘এ সব অস্ত্র কী করে ছাত্রদের হাতে এল তা তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে। আর ঘটনাটি যেহেতু কলেজের বাইরে হয়েছে তাই প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ছাত্রদের অভিযোগ পেয়েই পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশকে গোটা ঘটনার একটি বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (উত্তর) স্বাতী ভাঙ্গালিয়া বলেন, ‘‘কয়েক জন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ (মারাত্মক অস্ত্র দিয়ে আঘাত), ৩৪২ (কোনও ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে আটক) ও ৩৪ (বেআইনি জমায়েত) ধারায় মামলা করা হয়েছে। এই তিন জন ছাড়া আর এক জনকে কলেজ কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Police stab
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE