Advertisement
০৬ মে ২০২৪

পুলিশ জালে আইটিআই ‘স্যার’ অমিয়

পুলিশ অমিয়বাবুকে গ্রেফতার করলেও ভয় যাচ্ছে না আইটিআইয়ের পড়ুয়া এবং শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। কারণ, মঙ্গলবার অমিয়বাবুর ডাকে যে সব দুষ্কৃতী আইটিআই-তে এসে হামলা করে, তাদের কেউ এখনও ধরা পড়েনি।

গ্রেফতার: আদালতের পথে অভিযুক্ত অমিয় কুমার। নিজস্ব চিত্র।

গ্রেফতার: আদালতের পথে অভিযুক্ত অমিয় কুমার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৩
Share: Save:

তাঁর ‘কীর্তি’ নিয়ে নানা মহলে শুরু হয়েছিল সমালোচনা। উঠেছিল প্রশ্নও। দুষ্কৃতীদের ডেকে এনে হুগলি আইটিআই-তে ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলা করানোর অভিযোগে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার হলেন সেখানকার শিক্ষক অমিয় কুমার। তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি (৩৫৪), খুনের চেষ্টা (৩০৭), অস্ত্র আইন (২৫/২৭)-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির মোট ৮টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

বুধবার ভোরে চুঁচুড়ার কারবালা এলাকা থেকে অমিয়বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, সেখানে তিনি এক পরিচিতের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। মোবাইলের সূত্র ধরেই তাঁর হদিস মেলে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত কবুল করেছেন, তাঁর সঙ্গে কিছু দুষ্কৃতীর যোগাযোগ রয়েছে। ধৃতকে এ দিনই চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতে যাওয়ার পথে অমিয়বাবু বলেন, ‘‘আমি ছাত্রছাত্রীদের একটু ভয় দেখাতে পরিচিত কয়েকটা ছেলেকে ডেকেছিলাম। কিন্তু ব্যাপারটা যে এত বড় হয়ে যাবে, বুঝতে পারিনি।’’

পুলিশ অমিয়বাবুকে গ্রেফতার করলেও ভয় যাচ্ছে না আইটিআইয়ের পড়ুয়া এবং শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। কারণ, মঙ্গলবার অমিয়বাবুর ডাকে যে সব দুষ্কৃতী আইটিআই-তে এসে হামলা করে, তাদের কেউ এখনও ধরা পড়েনি। ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষাকর্মীদের অনেকেই বলছেন, অমিয়বাবুকে গ্রেফতারের বদলা নিতে রাস্তাঘাটেও ওই দুষ্কৃতীরা হামলা চালাতে পারে। পুলিশ অবশ্য ধৃতকে জেরা করে ওই দুষ্কৃতীদের দ্রুত ধরার আশ্বাস দিয়েছে।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘ইলেকট্রিক্যাল’ বিভাগের শিক্ষক অমিয়বাবুর বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে সেখানকার দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে আইটিআই কর্তৃপক্ষ এবং থানাতেও অভিযোগ দায়ের হয়। আগেও কয়েকবার তাঁর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠেছিল। আইটিআই কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে অমিয়বাবুকে শোকজ করেন। এর পর থেকেই তিনি ওই বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের নানা ভাবে হেনস্থা করছিলেন এবং হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারও ক্লাসে তিনি অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ। তার পরেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে ফোনে কিছু সশস্ত্র দুষ্কৃতীকে ডেকে আনেন।

এর পরেই বেনজির ভাবে জনা পনেরো দুষ্কৃতী মোটরবাইকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে। এক হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে তারা ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষাকর্মীদের চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। সেই সময়ে অমিয়বাবু দুষ্কৃতীদের উৎসাহ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়ে দুষ্কৃতীরা অমিয়াববুকে নিয়েই বেরিয়ে যায়। অমিয়বাবুক খোঁজে রাতভর তল্লাশি চালায় পুলিশ। বুধবার ভোরে ধরা পড়ে যান ‘স্যার’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE