Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Khanakul

নির্দেশ সত্ত্বেও জমা জল বের করার পথ অমিল

মাঠ-ঘাট থই থই করছে। সর্বত্রই প্রায় তিন ফুট জল দাঁড়িয়ে। 

জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে জেলাশাসক। বুধবার খানাকুলে। —নিজস্ব িচত্র

জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে জেলাশাসক। বুধবার খানাকুলে। —নিজস্ব িচত্র

পীযূষ নন্দী
খানাকুল শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩৮
Share: Save:

ফসলের ক্ষতি রুখতে চাষজমি থেকে বৃষ্টির জমা জল বের করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু খানাকুল-২ ব্লকের বিভিন্ন খেত থেকে জমা জল বের করার দিশা পাচ্ছে না সরকারি দফতরগুলি। মাঠ-ঘাট থই থই করছে। সর্বত্রই প্রায় তিন ফুট জল দাঁড়িয়ে।

বুধবার দুপুরে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও ওই ব্লকের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। ড্রোন উড়িয়ে মাঠঘাটের পরিস্থিতি দেখেন। দেখেন নদনদীর অবস্থাও। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তা খুঁজতে ব্লক স্তরে টাস্ক ফোর্সের মিটিং করা হবে। সেচ দফতরের বিশেষজ্ঞরা বিষয়টা খতিয়ে দেখছেন। অরোরা খাল দিয়ে জল খুব কম নামছে। সেটারও সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। এটা বন্যার জল নয়। বৃষ্টির জমা জল হয়তো কয়েক দিনের মধ্যেই বেরিয়ে যাবে। কিন্তু আমরা ফসল বাঁচাতে জলটা দ্রুত বের করতে চাইছি।”

মঙ্গলবার নবান্নের সভাঘরে আয়োজিত পাঁচ জেলার সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দেখতে হবে, আর ক্ষতি যেন না হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জল জমেছে কৃষিজমিতে। তাতে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। এমন অবস্থায় ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করতে হবে। চাষের জমি থেকে জমা জল কী ভাবে বার করা যায়, করতে হবে তার ব্যবস্থাও।’’

জমা জল বের করার জন্য জেলাশাসক, বিডিও, সেচ ও জলসম্পদ দফতর এবং কৃষি দফতরের মধ্যে সমন্বয়ে জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু খানাকুল-২ ব্লকের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, সবই তো জলে ভর্তি। জলটা নামবে কোথায়? পাম্প বসিয়ে জমা জলটা ফেলার জায়গা নেই। সব নিকাশি নালাও ভর্তি। রূপনারায়ণ হয়ে সমস্ত জল নামার কথা। সেই নদও ভর্তি। উল্টে রূপনারায়ণের জলই নিকাশি নালা বেয়ে ঢুকে পড়ছে।

মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, “আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ের কাজে ধরা না-থাকায় রূপনারায়ণে পড়ার আগে অরোরা খালের ১২ কিমি সংস্কার হয়নি। সেটি অবিলম্বে সংস্কারের জন্য জেলাশাসক বলেছেন।”

আরামবাগ মহকুমার আরামবাগ ব্লক, পুরশুড়া, গোঘাটের ২টি ব্লক এবং খানাকুল-১ ব্লকে বৃষ্টির জমা জল অনেকটা নামায় প্রশাসন স্বস্তি পেলেও শুধু খানাকুল-২ ব্লক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহকুমার অন্যত্র ডুবে থাকা ধান গাছ জেগে উঠেছে। কিন্তু খানাকুল-২ ব্লক এলাকার কৃষিক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। বিশেষত, ধান্যগোড়ি, জগৎপুর, মাড়োখানা, রাজহাটি-১ এবং শাবলসিংহপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কৃষি দফতরও উদ্বিগ্ন।

মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, “ওই পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে ২৫৪০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ২০ শতাংশ জমি ডুবে রয়েছে বলে ইতিমধ্যে হিসেব মিলেছে।” যদিও কৃষকদের দাবি, ওই পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার সমস্ত আমন চাষের জমিই জলমগ্ন। আর গোটা ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার মোট ৬৩০০ হেক্টর আমন চাষের জমির অর্ধেকের বেশিই ডুবে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kahankul Agriculture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE