ঐতিহাসিক এই তোরণ রক্ষণাবেক্ষের দাবি উঠেছে। ছবি: মোহন দাস।
খিলান করা বিশাল তোরণ দু’টি ভেঙে পড়েছে। দেওয়াল ফাটিয়ে অশ্বত্থ-সহ নানা গাছগাছালি। দেওয়ালে ঘুঁটে। পুরো চত্বরটি বছরের পর বছর সাপের আড্ডা হয়েই থাকে। গোঘাটের সানবাঁধি গ্রামে বাংলার নবাব সুজাউদ্দিনের স্মৃতি বিজড়িত প্রাচীন ঐত্যিহাসিক ওই স্থাপত্য শৈলী-দু’টি তোরণ রক্ষণাবেক্ষণ তো দূরঅস্ত্, বিলুপ্ত হওয়ার মুখে।
দু’টি তোরণে ছিল পারসি ভাষায় লেখা শিলালিপি। তার একটি চুরি হয়ে যাওয়ার পর দক্ষিণের তোরণের একটি শিলালিপি গ্রামবাসীরাই খুলে মসজিদে রেখেছেন। গত ৩০ বছর ধরে স্থানীয় মানুষ তোরণ দু’টি রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানালেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক নজরুল ইসলাম, শেখ হামিদ আলি, মোবারক মণ্ডল, আনসার আলির অভিযোগ—“ফটক দু’টি সংস্কার এবং সংরক্ষণের দাবিতে পঞ্চায়েত-ব্লক এবং জেলা পরিষদে বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। উল্টে ভিকদাস থেকে শ্যাওড়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের রাস্তা করার সময় দু’টি ফটকের একটির বেশ কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” সে সময় গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়ালে প্রাচীন ওই স্থাপত্য রক্ষা পেলেও রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে একেবারে তোরণ দু’টির গা ঘেঁষে।
সানবাঁধির প্রাচীন স্থাপত্য শৈলী সংরক্ষণ নিয়ে গোঘাট বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার বলেন—“গোঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পুরাতত্ত্বের অনেক নিদর্শন আছে। সে সব সংরক্ষণের জন্য বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে আনা হবে।’’ মহকুমা প্রশাসনের পক্ষে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবজিৎ বসু বলেন—“বিষয়টা বিডিও খতিয়ে দেখবেন। সেই মতো বিষয়টা জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগে দরবার করা হবে।’’
রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের সিনিয়র আর্কিওলজিস্ট প্রকাশচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘‘ওই প্রাচীন প্রত্নসৌধটি নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হল স্থাপত্যের গায়ে গাছপালা জন্মে গিয়েছে। শিকড় নেমে গিয়ে স্থাপত্যটি নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা চেষ্টা করব, ওই এলাকায় অনুসন্ধান করার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy