মৃত: সুচিত্রা গুপ্ত। ফাইল চিত্র
ডেঙ্গির গ্রাসে মৃত্যু হল আরও এক জনের। এ বার বালিতে। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশাসন ও হাসপাতালের মধ্যে চাপান-উতোর চলছেই। হাসপাতাল বলছে, ডেঙ্গি-সহ অন্য শারীরিক উপসর্গের কারণে রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কাউন্সিলর এবং হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এখানে ডেঙ্গি নির্ধারণ সঠিক পদ্ধতিতে হয়নি।
শনিবার রাতে, উত্তরপাড়ার বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় বালির বাসিন্দা সুচিত্রা গুপ্তের (৬৩)। পরিবার সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১৩ তারিখ থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখাচ্ছিলেন সুচিত্রাদেবী। ক্রমেই অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার তাঁকে উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সে দিন রাতেই তাঁর রক্ত পরীক্ষা হয়। নার্সিংহোম সূত্রের খবর, পর দিন রিপোর্টে ধরা পড়ে সুচিত্রাদেবী ডেঙ্গি আক্রান্ত। দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে রাতেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার।
এ দিকে হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য ডেঙ্গিতে মৃত্যুর অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘নার্সিংহোমটি রোগিণীর ভর্তির এক দিনের মধ্যে কী ভাবে এনএস-১ পজিটিভ দেখে নিশ্চিত হয় যে ডেঙ্গি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দিষ্ট প্রোটোকল মানা হয়নি। ‘ডেথ সার্টিফিকেটে’ মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি থাকলেও তার সমর্থনে যথেষ্ট নথি নেই।’’ তিনি জানান, নার্সিংহোমটি হাওড়া পুরসভার অধীন নয়। বিষয়টি তাই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে দেখার অনুরোধ করা হবে। ছুটির পরে পুরসভা খুললে সব রিপোর্ট ও কাগজ খতিয়ে দেখা হবে।
গঙ্গার ধারে কাকেশ্বরতলা ঘাটের কাছেই মহেন্দ্র বাগচী রোডে বাড়ি সুচিত্রাদেবীর। পরিজনদের কাছে এ সব বিতর্ক অর্থহীন। একমাত্র ছেলে হীরক গুপ্ত বলেন, ‘‘১৩ তারিখে মায়ের জ্বর আসার পরে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানো হচ্ছিল। প্যারাসিটামল খেয়ে জ্বর কমে যায়। কিন্তু কালীপুজোর দিন ফের জ্বর আসে। শুক্রবার অন্য চিকিৎসককে দেখানো হয়। মায়ের শরীর ক্রমেই খারাপ হচ্ছিল। রাতেই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলে তাঁর রক্ত পরীক্ষা হয়। পর দিন সকালে জানা যায় ডেঙ্গি হয়েছে। চিকিৎসকের কথা মতো, সন্ধ্যায় প্লাজমা নিয়ে আসি। দু’টি কিডনি অকেজো হওয়ায় রাতের দিকে ডায়ালিসিস চালু হয়। রাত দশটার পরে মারা যান মা।’’
নার্সিংহোমের তরফে জানানো হয়, সুচিত্রাদেবী ভর্তি হয়েছিলেন ডেঙ্গি শক নিয়ে। সেপ্টিসেমিয়াও হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ধীরে ধীরে কিডনি কাজ করা বন্ধ করে। শেষে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট করে মৃত্যু হয় সুচিত্রাদেবীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy