Advertisement
২১ মে ২০২৪
সঙ্কটে শহর

বেহাল নিকাশিই বাড়াচ্ছে মশা

মশা মারার ধূপ-তেল জ্বালিয়েও রক্ষা নেই। কম্পিউটারে কাজ করতে করতে অনবরত মশা মারতে হচ্ছে খোদ আরামবাগ পুরসভা ভবনের কর্মীদেরই!

পী়যূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৮
Share: Save:

মশা মারার ধূপ-তেল জ্বালিয়েও রক্ষা নেই। কম্পিউটারে কাজ করতে করতে অনবরত মশা মারতে হচ্ছে খোদ আরামবাগ পুরসভা ভবনের কর্মীদেরই!

প্রতিটি পুরসভাকেই জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু আরামবাগ পুরসভার সে উদ্যোগ কোথায়? পুরসভার কর্মীরাই বলছেন, এখানে মশাদের কোনও ‘সিজন’ নেই। সারা বছর ধরেই মশার কামড় খেতে হয়।

গত বছর বর্ষার মরসুমে এ শহরে চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। বহু মানুষ জ্বর এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার পরেও শহরেও নিকাশি নালাগুলিতে থিক থিক করছে প্লাস্টিক ও পলিথিন। জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বহু মানুষ। আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘বাম আমলে যা ছিল তার চেয়ে আমরা অনেকটাই মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘরে ঘরে সচেতন করছেন। ওয়ার্ডগুলিতে মশা মারার ওষুধও ছড়ানো হচ্ছে। মশাকে জব্দ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।”

কোথায় কোথায় কী ধরনের মশা বংশবিস্তার করছে তা না জানতে পারলে মশা দমন সম্ভব নয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বহুদিন থেকেই এ কথা পুরসভাগুলিকে বলে আসছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভা বাদে রাজ্যের আর কোনও পুরসভাতেই পতঙ্গবিদ নেই। আরামবাগ পুরসভা জানিয়েছে, গত সপ্তাহেই শহরের রবীন্দ্রভবনে মশা মারার নানা কৌশল নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ডে মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সচেতনতা শিবির করা শুরু হয়েছে। নিকাশি নালাগুলিতে গাপ্পি মাছ ছাড়া হবে। যাতে তারা মশার লার্ভা খেয়ে ধ্বংস করতে পারে। মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু এই সচেতনতা শিবির এবং গাপ্পি মাছ ছাড়া নিয়ে শহরবাসীর অনেকেরই কোনও আগ্রহ নেই। তাঁদের মতে, এ সব স্থায়ী সমাধান নয়। এ শহরে মশার দৌরাত্ম্য বরাবরের। প্রতি বছরই বর্ষার মরসুমে ম্যালেরিয়ার আশঙ্কা থাকে। মশা নিয়ন্ত্রণে আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধে অকর্মণ্যতার অভিযোগ তুলে তাঁরা বলেন, ‘‘শহরের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কারণেই মশার উপদ্রব বাড়ছে। নিকাশি নালাগুলো বুজে যাওয়ায় সারা শহরই মশার আঁতুড়ঘর। এই মূল সমস্যার সমাধান না করে খালি মশা মারার কৌশল নিয়ে ঢাক পেটাচ্ছে পুরসভা।”

পুরসভার চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘১৯টি ওয়ার্ডের মূল ৬২টি খোলা নিকাশি নালা ইতিমধ্যেই সংস্কারে হাত দিয়েছি। আশা করছি এ বার সমস্যা অনেক কমবে।’’ কিন্তু বর্ষার আগে সেই সংস্কার শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Increasing mosquitoes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE