Advertisement
০৬ মে ২০২৪

গোলমেলে আবহাওয়ায় পরামর্শ স্বল্পমেয়াদী চাষে

ডিসেম্বর মাস কিন্তু ঠান্ডা পড়তে গিয়েও পড়েনি। শীত এসেও থমকে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন রবি ফসলের চাষিরা। কৃষি আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখনই খুব ঠান্ডা পড়ছে না। আবার নিম্নচাপের খাঁড়া ঝুলে থাকলেও এই মুহূর্তে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম।

ধান ঘরে তোলার পালা। বসিরহাটে ছবিটি তুলেছেন নির্মল বসু।

ধান ঘরে তোলার পালা। বসিরহাটে ছবিটি তুলেছেন নির্মল বসু।

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৩
Share: Save:

ডিসেম্বর মাস কিন্তু ঠান্ডা পড়তে গিয়েও পড়েনি। শীত এসেও থমকে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন রবি ফসলের চাষিরা। কৃষি আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখনই খুব ঠান্ডা পড়ছে না। আবার নিম্নচাপের খাঁড়া ঝুলে থাকলেও এই মুহূর্তে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম।

ঋতুচক্র গোলমেলে হচ্ছে ক্রমশ। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা তিনটি মূল ঋতুই এগিয়ে বা পিছিয়ে যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের থেকে। রবি চাষের মরসুমে আর্দ্রতা ও উষ্ণতা বেশি থাকার ফলে সব্জি-সহ রবি ফসলের উপরে খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।

রাজ্যে ৪.৬০ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে এ বছর রবি শস্য চাষ হয়েছে। কিছু জায়গায় দেরিতে লাগানো বোরো ধানের বীজতলা ফেলা হচ্ছে। এ বার বর্ষাও পিছিয়ে যাওয়ায় বোরো ধানের পাশাপাশি রবি ফসলের চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। শীতের শুরুতে প্রতি বছর যে বৃষ্টি হয়, এ বার তা-ও হয়নি। ফলে জাঁকিয়ে শীত পড়ার বদলে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা বেশি মাত্রায় আছে। এমনিতেই সব্জির বাজারে দাম কমার লক্ষণ নেই। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ফলন খারাপের আশঙ্কায় ঋণের বোঝা বাড়ারও প্রমাদ গুনছেন চাষিরা।

রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে চাষিরা পচন রোগ ও পোকার আক্রমণের প্রতিকারের বিষয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি বিকাশ কেন্দ্রগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নদিয়ার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞানী কৌশিক ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘বহু চাষি এখনই আমাদের হেল্প লাইনে যোগাযোগ করছেন। সরাসরিও জানতে চাইছেন, চাষের ক্ষতি সামলাবেন কী করে।’’ তিনি জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য শীতের সব্জির ক্ষেত্রে গোড়া পচা ও ফুল পচার ঘটনা ঘটছে। বর্ষার পরে যে পোকামাকড় দেখতে পাওয়ার কথা নয়, সেগুলো ফের নতুন করে বংশ বিস্তার করছে। ফসলের ক্ষতি করছে। রোগ, পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ ও স্বল্পমেয়াদী চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।দক্ষিণবঙ্গের বহু চাষি জানিয়েছেন, ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে গোড়া পচতে শুরু করেছে বেশ কিছু জমিতে। দিনের বেলা তাপ বাড়ায় সব্জি গাছ নুইয়ে পড়ছে। রাতে শিশিরও তেমন পাচ্ছে না। বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় অনেক চাষি রবি শস্যের চারা লাগানোয় অপেক্ষা করছেন। বৃষ্টি হলে ছোট চারার ক্ষতির ভয় আছে বলে জানিয়েছেন সর্ষে চাষিরা। সাধ্যমতো অনেকে আবার ‘পলিহাউস’ করা শুরু করেছেন।

কৃষি আবহাওয়া বিজ্ঞানী সাওন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি যা, এখনই চাষিদের আশা দেখাতে পারছি না। তবে প্রতিকূলতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে চাষিদের। তাঁদের পরামর্শ দেওয়ার সময়ে আমরা এই প্রতিকূলতা এড়িয়ে চাষ করার বিষয়ের উপরেই এখন জোর দিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agriculture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE