প্রতীকী ছবি।
জেলা পরিষদের আসনগুলিতে দলের বাড়তি মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোয় সফল হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু হাওড়ার বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে সেই সাফল্য যে আসেনি তা মানছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশ। আর তাই ১৪ মে, পঞ্চায়েত ভোটের দিন কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। অনেকেই মানছেন, গোষ্ঠী-কোন্দলই এ বার গলার কাঁটা!
প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ বার জেলার বহু জায়গায় শাসকদলের বিশৃঙ্খলা বেআব্রু হয়। বহু ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর আসন সংরক্ষিত হওয়ায় তাঁদের পুনর্বাসন দিতে কালঘাম ছুটে যায় দলীয় নেতৃত্বের। যে সব আসনে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা হয়, সেখানে আবার দলের পুরনো নেতাকর্মীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। বহু আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিশেষ করে সাঁকরাইল এবং জগৎবল্লভপুরে অনেক আসনে শাসকদলের বাদ পড়া ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীরা নির্দল হয়ে লড়াই করে দলীয় প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন। বহিষ্কার করানোর ভয় দেখিয়েও তাঁদের ময়দান থেকে সরানো যায়নি। বিক্ষুদ্ধদের দাবি, তাঁরাই যে আসল তৃণমূল, তা দলের প্রার্থীদের পরাস্ত করে দেখিয়ে দেবেন।
জেলা পরিষদের ৪০টি আসনে তৃণমূলের ৫৪টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। পঞ্চায়েত সমিতির ২৪৩১টি আসনে ২৮৯৪টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৪৬২টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ৬৩৫টি। পরে দেখা যায়, ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫০টি এবং ১৪টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে তিনটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের আসনগুলিতে বাড়তি মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়। কিন্তু বাকি দু’টি স্তরে গোষ্ঠী-কোন্দল এড়ানো যায়নি। আমতা-১ ব্লকের চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের সব ক’টিই এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতলেও তাদের দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি এড়ানো যায়নি। যদিও ‘নির্দল’ সমস্যা তাঁদের জেতার পথে সমস্যা হবে না বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
বিরোধীদের ক্ষেত্রে সমস্যা হল মনোনয়নপত্র জমা দিতে না-পারা। গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি মাত্র ১৩৭৪ আসনে, বামফ্রন্ট ১২০০ আসনে এবং কংগ্রেস ২৬২ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। তাদের একই দশা পঞ্চায়েত সমিতিতেও। শুধুমাত্র জেলা পরিষদে বিরোধীরা সব আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। এর জন্য তৃণমূলের সন্ত্রাসকেই দায়ী করেছে তারা। বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে আমাদের প্রার্থীদের অনেককে আটকে দেওয়া হয়।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘এই নির্বাচন আসলে একটা প্রহসন।’’ আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের কথায়, ‘‘অনেক জায়গায় আমাদের নাগরিক কমিটির নামে প্রতীক ছাড়া লড়তে হচ্ছে।’’
সব অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় এবং (গ্রামীণ) সভাপতি পুলক রায়ের দাবি, ‘‘বিরোধীরা কুড়িয়ে-বাড়িয়ে কিছু আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। আমরা যদি সন্ত্রাস করতাম তা হলে সেই আসনেও প্রার্থী দিতে পারত না। গ্রামে ওদের কোনও লোক নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy