চার শ্রমিককে বের করে দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিলেন সহকর্মীরা। ফলে অচলাবস্থা হয় ভদ্রেশ্বরের ডালহৌসি জুটমিলে। বৃহস্পতিবারের ঘটনা।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে খবর, চাঁপদানির ডালহৌসি জুটমিলের স্পিনিং বিভাগের শ্রমিক সহদেব সাউ, চণ্ডেশ্বর সাউ, জয়প্রকাশ কাশ্যপ এবং সুরেশ প্রসাদের দাবি ছিল, অতিরিক্ত কাজ করানো যাবে না। অতিরিক্ত কাজ করালে বেতন বাড়াতে হবে। বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করানো বন্ধ করতে হবে। এই সব দাবিতে কাজ বন্ধ করায় মিল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বসিয়ে দেয়। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মিলের স্পিনিং বিভাগের সমস্ত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেন। সব শ্রমিকদের দাবি, ওই চার শ্রমিক কাজে যোগ না দিলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না। এর পরেই মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের বৈঠক হয়। অশান্তি এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ সবের জেরে এ দিন কারখানায় অচলাবস্থা তৈরি হয়।
মিল কর্তৃপক্ষের দাবি, আগে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিক। তার পরে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু শ্রমিকরা তাতে রাজি হননি। স্পিনিং বিভাগের শ্রমিক সুরেশ প্রসাদের অভিযোগ, ‘‘আমাদের উপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দিকে কোনও নজর না দিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে কম পয়সায় শ্রমিককে দিয়ে কাজ করাচ্ছে। শ্রমিকদের এই সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করায় আমাদের বের করে দেওয়া হয়।’’ মিলের পক্ষ থেকে ওয়ার্কার প্রেসিডেন্ট রঞ্জন মোহান্তি বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেওয়ার পর তাদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দেওয়ার ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’’
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির সমর্থনে সব শ্রমিক এক হয়ে পথে নামেন। এ দিন দুপুরে মিলের গেটে সমাবেশও হয়। তাতে সিদ্ধান্ত হয়, মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের এই সমাধানে কোনও উৎসাহ না দেখালে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন। মিলের টিএমসি সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি অমর প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রথমত ওই চার শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ না জানিয়ে নিজেরাই গিয়ে ভুল করেছেন। চার শ্রমিকের জন্য সকলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে নিজেদেরই ক্ষতি হল। এখন বাইরে থেকে বিজেপি নেতৃত্ব আন্দোলন করছে। কাজ বন্ধ করে আন্দোলন ঠিক নয়।’’
ভিন্ন মত সিআইটিইউ সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি আকবর আলির। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। তবে শ্রমিকেরা সংগঠনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে না গিয়ে নিজেদের ঘাড়ে দায়িত্ব নিয়ে ভুল করেছে। মিলের সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের উচিত মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy