উদ্বোধন হয়েছে এক মাস আগে। অবশেষে চালু হল শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাস। শহরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা দু’টি বাসস্ট্যান্ড উঠে গেল। তবে তাতে যানজট থেকে মুক্তি মিলবে কিনা, প্রশ্ন রয়েই গেল।
শ্রীরামপুর আদালতের সামনে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে বীরশিবপুর, আউশবালি, তারকেশ্বর, জাঙ্গিপাড়া যাওয়ার বাস, ডোমজুড় রুটের মিনিবাস এবং খান চল্লিশ ট্রেকার দাঁড়াত। শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় নয় দশকের পুরনো শ্রীরামপুর-বাগবাজার ৩ নম্বর বাসরুটের স্ট্যান্ড ছিল। সব রুটেরই বাস-ট্রেকার শহরের অমূল্যকানন এলাকায় জিটি রোডের ধারে নবনির্মিত বাসস্ট্যান্ডে উঠে গিয়েছে।
বাস মালিকরা জানান, নয়া ব্যবস্থায় পুরনো রুট ধরে ওয়ালশ হাসপাতাল, গার্লস কলেজ, ব্লক অফিস, আদালত চত্বরে এসে যাত্রী নামিয়ে এবং অপেক্ষমাণ যাত্রীদের তুলেই বাস টার্মিনাসে ফিরে যাচ্ছে। সেখান থেকে গন্তব্যের দিকে রওনা হচ্ছে। গত ৬ অগস্ট টার্মিনাসটির উদ্বোধন হয়। বলা হয়েছিল, ১৭ জানুয়ারি থেকে টার্মিনাস চালু হবে। কিন্তু পরিকাঠামোগত কিছু কাজ না-হওয়ায় তা করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত গত বুধবার থেকে টার্মিনাস চালু হয়েছে।
প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক বাস টার্মিনাসটি তৈরি করেছে এইচআরবিসি। বেসমেন্টে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। দোতলায় যাত্রী প্রতীক্ষালয়, আধুনিক মানের শৌচাগার। পুরসভার উদ্যোগে ক্যান্টিনও চলবে। তিন, চার এবং পাঁচ তলার নির্মাণকাজ এখনও চলছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। ভবনের খরচ তোলার জন্য ওই তিনটি তল বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হবে।
শহরবাসীর অনেকে মনে করছেন, যানজট কমাতে বাস টার্মিনাস হলেও টোটো চলাচলে লাগাম টানা না-গেলে কোনও ব্যবস্থাই কাজে আসবে না। সকলেই অবশ্য একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, আদালতের সামনে থেকে বাসস্ট্যান্ড উঠে রাস্তা ফাঁকা হওয়ায় জায়গাটি অনেক সুন্দর হয়েছে। শহরের আঞ্চলিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে জায়গাটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই শহরে ঘাঁটি গেড়েছিল দিনেমাররা। বর্তমানে যে চৌহদ্দিতে ছড়িয়ে রয়েছে আদালত এবং প্রশাসনিক ভবন, সেখান থেকে (গভর্নমেন্ট কমপাউন্ড) ডেনিস শাসকরা রাজ্যপাট পরিচালনা করতেন। সেই সময়েই ওই জায়গায় এবং আশপাশে বেশ কিছু স্থাপত্য গড়ে উঠেছিল। ডেনিসদের টাকায় ওই সমস্ত জরাজীর্ণ ভবন পুরনো আদলেই সেজে উঠছে।
পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোস সিংহ জানান, ওই চৌহদ্দিতে আগেকার সৌন্দর্য ফেরাতে সব রকম চেষ্টা চলছে। পুরনো সৌন্দর্য ফিরে পাওয়ার আশায় শহরবাসী।