Advertisement
E-Paper

আলোচনার চিঠি প্রত্যাখ্যান, মিটল না সমস্যা

দলের তরফে নির্দেশ ছিল। অক্ষরে অক্ষরে তা মেনেছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান। পদত্যাগী আট কাউন্সিলরকে চি‌ঠি পাঠিয়ে আলোচনায় ডেকেছিলেন সমস্যা সমাধানের জন্য। কিন্তু বিবাদ মিটল না। কারণ, আট কাউন্সিলরের কেউই পুরপ্রধান স্বপন সামন্তর সেই চিঠি গ্রহণ করলেন না।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৩

দলের তরফে নির্দেশ ছিল। অক্ষরে অক্ষরে তা মেনেছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান। পদত্যাগী আট কাউন্সিলরকে চি‌ঠি পাঠিয়ে আলোচনায় ডেকেছিলেন সমস্যা সমাধানের জন্য। কিন্তু বিবাদ মিটল না। কারণ, আট কাউন্সিলরের কেউই পুরপ্রধান স্বপন সামন্তর সেই চিঠি গ্রহণ করলেন না। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিয়েছে তারকেশ্বর পুরসভায়।

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে পুরসভার ৮ কাউন্সিলর পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে পুরসভার সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন। ওই দলে রয়েছেন পুরসভার চারটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির মেয়র-ইন-কাউন্সিলররাও। তাঁদের অভিযোগ ছিল, পুরপ্রধান পুরসভার কাজে কাউন্সিলরদের কোনও গুরুত্বই দিচ্ছেন না। বহু ক্ষেত্রেই পুরপ্রধান এককভাবেই সিদ্ধান্ত নেন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুর এলাকায় কোনও নির্মাণ কাজ নিয়ে পুরপ্রধান-সহ কাউন্সিলররা কোনও ভূমিকা নিতে পারবেন না। পুরসভার প্রশাসনিক কর্তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনও নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে নকশা থেকে পুরো বিষয়টির অনুমোদন পুরসভার প্রশাসনিক কর্তাদের অনুমোদন সাপেক্ষে হবে। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের অভিযোগ, সেই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর পূর্ত দফতরের মেয়র-ইন-কাউন্সিল নিময় মেনে কোনও সই করেন না। কাজের ক্ষেত্রেও মাথাও গলান না। অথচ পুরপ্রধান এখনও নকশা বা আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে অবলীলায় সই করে যাচ্ছেন। যা সরকারি নির্দেশিকার পরিপন্থী।

বস্তুত, তারকেশ্বর পুরসভায় পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের মধ্যে বিবাদ নতুন ঘটনা নয়। পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুরবাসীরা সে সব দেখে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ, তারকেশ্বরের মতো গ্রামীণ অনুন্নত এই পুর এলাকায় কাজের নানা সুযোগ ছিল। এলাকা উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু সে দিকে পুর কর্তৃপক্ষের নজর নেই। উন্নয়নের পথে না গিয়ে দু’পক্ষই নিজেদের মধ্যে আকচা-আকচিতে ব্যস্ত। তাঁদের আরও অভিযোগ, তারকেশ্বর মন্দিরের মতো একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থান রয়েছে পুর এলাকায়। সেই মন্দিরকে সামনে রেখে পর্যটন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে এলাকার উন্নয়ন হতে পারত পুরসভা। কিন্তু সেই কাজে পুরসভার নজর নেই।

পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত বলেন, ‘‘আসলে সরকার পুর এলাকায় নির্মাণের উপর মেয়র-ইন-কাউন্সিলরদের ক্ষমতা যবে থেকে খর্ব করেছে সেদিন থেকে ওঁদের গোঁসা। ওঁরা বুঝতে চাইছেন না, এটা আমার সিদ্ধান্ত নয়, সরকারের। ইঞ্জিনিয়ার কোনও নির্মাণ কাজ অনুমোদন করার পরই আমি সই করছি। না হলে ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে? গোটা জেলার সব পুরসভাতেই এই নিয়মে কাজ হচ্ছে। কিন্তু ওঁরা আমার উপর রেগে গিয়ে ছুতোনাতায় পুরসভার কাজে বাগড়া দিচ্ছেন।’’

বিরুদ্ধ এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পুরপ্রধান অযথাই বিবাদের উৎসমুখ ভিন্ন পথে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। উনি তো একবার সমস্যা মেটাতে উপ-প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন।’’ পুরপ্রধানের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘উপ-প্রধান নিজেই সমস্যা তৈরি করছেন। ওঁর সঙ্গে কী কথা বলব? যা বলার দলকে জানিয়েছি।’’

দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপনণমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘তারকেশ্বর পুসভায় দু’পক্ষের বিবাদে স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা হচ্ছে এটা ঘটনা। মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন উন্নয়নের জন্য। আমাদেরও দায়িত্ব, মানুষের যাতে কোনও সমস্যার কারণ না হই। দু’পক্ষকে বলেছি দ্রুত বসে নিজেদের ভিতর সমস্যা মিটিয়ে উন্নয়নের কাজে সামিল হতে।’’

যদিও সভাপতির এমন নির্দেশে বিবাদ মেটে কি না, সামনের দিনগুলিতেই তা বোঝা যাবে

chairman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy