Advertisement
E-Paper

চন্দননগর পুরসভায় ফের রামবাবুরা, অসন্তোষ দলে

সাধারণ অনেক শহরবাসী বিভ্রান্ত। ঠিক কী হবে এ বার? পরিষেবা ঠিকঠাক মিলবে? রাস্তাঘাট মেরামত হবে?   

প্রকাশ পাল ও তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪১
জেরবার: চন্দননগর পুরসভা। —ফাইল ছবি

জেরবার: চন্দননগর পুরসভা। —ফাইল ছবি

অসন্তুষ্ট শহরের তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশই।

সাধারণ অনেক শহরবাসী বিভ্রান্ত। ঠিক কী হবে এ বার? পরিষেবা ঠিকঠাক মিলবে? রাস্তাঘাট মেরামত হবে?

নির্বাচন না-করে চন্দননগর পুরসভা চালাতে ভেঙে দেওয়া বোর্ডেরই মেয়র-সহ চার জনের উপরে ভরসা রেখেছে নবান্ন। তাঁদের সঙ্গে থাকছেন মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন এবং পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু। স্বপনবাবু চেয়ারম্যান‌ হিসেবে কাজ করবেন‌। সোমবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে ওই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আর তার পরেই সরগরম চন্দননগর।

ওই নির্দেশের কথা জেনে প্রাক্তন এক তৃণমূল কাউন্সিলরেরই প্রশ্ন, ‘‘এটা ঠিক হল না। দলীয় বৈঠকে এই মেয়রকেই ব্যর্থ বলা হয়েছিল। আর এক জন মেয়র-পারিষদ গোলমালে সিদ্ধহস্ত। এঁদের হাতে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দিয়ে কোন বার্তা দেওয়া হল?’’ অপর এক কাউন্সিলরের ক্ষোভ, ‘‘এঁরা তো আবার ছড়ি ঘোরাবেন।’’

তৃণমূল কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে চন্দননগরের পুর-পরিষেবায় প্রভাব পড়েছিল। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাতে রাশ টানতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত গত বছরের অগস্ট মাসের শেষ দিকে পুরবোর্ড ভেঙে দেয় রাজ্য সরকার। পুর-কমিশনার স্বপনবাবুকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর ছ’মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ বার তাঁর সঙ্গে পুরসভা পরিচালনায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তী, প্রাক্তন মেয়র-পারিষদ মুন্না আগরওয়াল, অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্নিগ্ধা রায়কে।

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, নয়া সিদ্ধান্তে ঘুরপথে ফের রামবাবুদের হাতেই পুরসভার অনেকটা ক্ষমতা দেওয়া হল। ওই তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ঠিকমতো পুরসভা চালাতে না-পারায় দলে ভর্ৎসিত হতে হয়েছিল রামবাবুকে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে মদত দেওয়া এবং তাতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগও উঠেছিল। দলের কাউন্সিলরকে মারধর-সহ নানা ব্যাপারে আর এক দায়িত্বপ্রাপ্তের। অথচ, তাঁদেরই বেছে নেওয়া হল!

অনেকেরই বক্তব্য, এ ভাবে পুরসভা না-চালিয়ে ভোট করা উচিত। কেউ অবশ্য মনে করছেন, এক জনের পরিবর্তে ছ’জনকে দায়িত্ব দেওয়ায় পরিষেবা কিছুটা ভাল হতে পারে। কিন্তু বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা, সিপিএম নেতা রমেশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘নাটক চলছে যেন! যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বোর্ড ভেঙে দেওয়া হল, তাঁদের নিয়েই কমিটি গড়া হল! নির্বাচন বা বিরোধী পক্ষের মতামত ছাড়া এ ভাবে কমিটি গড়া বেআইনি এবং অগণতান্ত্রিক।’’ রাজ্য বিজেপি-র ওবিসি মোর্চার সভাপতি স্বপন পালের টিপ্পনী, ‘‘বিজেপির ভয়ে তৃণমূল সরকার দিশেহারা। হারায় ভয়ে ভোট করাতে চাইছে না। ওরা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’’ শহরের এক সিটু নেতা বলেন, ‘‘পুরসভায় টাকার বখরা নিয়েই তো যাবতীয় গোলমাল। সেটা বাড়বে না তো?’’

রামবাবুরা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা তাঁরা পালন করবেন। এর বাইরে তাঁরা কিছু বলতে চাননি। ইন্দ্রনীলবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূলের জেলা

কার্যকরী সভাপতি তথা দলের তরফে চন্দননগর বিধানসভার পর্যবেক্ষক, বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল পুরসভা চা‌লানো নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিরোধীদের চিন্তার কিছু নেই। ভোট যথাসময়েই হবে।’’

Chandannagar Municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy