তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বছর দেড়েক ধরে অচলাবস্থা চলছিল আরামবাগের হরিণখোলা-১ ও ২ পঞ্চায়েতে। ব্লক প্রশাসনের কড়া তদারকিতে সেই অচলাবস্থা কাটল। শুধু তা-ই নয়, ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে দুই পঞ্চায়েত যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে!
কী ভাবে সম্ভব হল এই কাজ?
আরামবাগের যুগ্ম বিডিও প্রদীপ রায় বলেন, “যখন যেমন সমস্যা দেখা দিয়েছে তা তৎক্ষণাৎ মেটাতে এলাকার বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বারবার আলোচনায় বসা হয়েছে। পরিষেবা আদায় করে নেওয়ার জন্য গ্রামবাসীদেরও বোঝানো হয়েছে। সব পক্ষের উদ্যোগেই কাজে ফিরেছে দু’টি পঞ্চায়েত।” পুরশুড়ার বিধায়ক মহম্মদ নুরউজ্জামান জানান, গ্রামে উন্নয়ন নিয়ে কোনও ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যাবে না বলে সমস্ত স্তরে কড়া ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত দু’টিতে কাজের পরিবেশ এমনই প্রতিকূল ছিল যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জুন মাসের এই সময় পর্যন্ত হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতে মাত্র ৫,৪৯৪টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। সে জায়গায় চলতি অর্থবর্ষে শুক্রবার পর্যন্ত শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৮৫টি। হরিণখোলা-২ পঞ্চায়েতে গত অর্থবর্ষে এই সময় পর্যন্ত ওই প্রকল্পে ৯৩৯০টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে শুক্রবার পর্যন্ত হয়েছে ১ লক্ষ ৩ হাজার ৭৩টি।
গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই দুই পঞ্চায়েত এলাকায় রাজনৈতিক ডামাডোল চলছিল। বিরোধীশূন্য ওই পঞ্চায়েতে দু’টি আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন হলেও পুড়শুড়া বিধানসভা এলাকায় পড়ে। ফলে, বোর্ড গঠনের শুরু থেকেই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের পুড়শুড়া নেতৃত্ব এবং আরামবাগ নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। বেশির ভাগ সময়েই পঞ্চায়েত সদস্যেরা পঞ্চায়েতে আসছিলেন না। ফলে, প্রতি মাসে পঞ্চায়েতের সাধারণ সভা এবং উপ-সমিতির সাধারণ সভা ডাকা হলেও তা কার্যকর হচ্ছিল না। এমনকী, ব্লক প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় গত ২১ ডিসেম্বর বিডিও অফিসে দু’টি পঞ্চায়েতের সদস্যদের প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে সভা ডাকা হলেও অধিকাংশ সদস্য হাজির হননি। পরে অবশ্য ব্লক প্রশাসনের লাগাতার চেষ্টায় গত ১৩ এপ্রিল পুরশুড়ার বিধায়কের উপস্থিতিতে ব্লকে একটি সভার পরে নিয়মিত সভাগুলি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy