Advertisement
E-Paper

শুভেন্দুর মৃত্যুতে ফের দাবি উঠল আরও সেতুর

সমস্যাটি ছিলই। ছিল তা মেটানোর দাবিও। বৃহস্পতিবার বছর চারেকের শুভেন্দুর খালে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা গ্রামবাসীদের সেই দাবিকে আরও জোরালো করল। রেলিং না থাকা কাঠের সেতু পার হওয়ার সময় মায়ের সাইকেল থেকে ছিটকে খালে পড়ে যায় শুভেন্দু।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৬
এমন একাধিক সেতুই যাতায়ােতর সম্বল মায়াচরে। ছবি: সুব্রত জানা।

এমন একাধিক সেতুই যাতায়ােতর সম্বল মায়াচরে। ছবি: সুব্রত জানা।

সমস্যাটি ছিলই। ছিল তা মেটানোর দাবিও। বৃহস্পতিবার বছর চারেকের শুভেন্দুর খালে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা গ্রামবাসীদের সেই দাবিকে আরও জোরালো করল। রেলিং না থাকা কাঠের সেতু পার হওয়ার সময় মায়ের সাইকেল থেকে ছিটকে খালে পড়ে যায় শুভেন্দু।

রূপনারায়ণের বুকে বহু বছর আগে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরই এখনকার মায়াচর। গোটা চর জুড়ে রয়েছে যাতায়াতের অসংখ্য ছোট কাঠের সেতু। ভৌগোলিক ভাবে মায়াচর পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার অমৃতবেড়িয়া পঞ্চায়েতের অধীন হলেও একেবারেই হাওড়া জেলা লাগোয়া। মায়াচরের কাছেই হাওড়ার রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। তবে মায়াচর থেকে রাধাপুরে আসতে হলে পার হতে হয় রূপনারায়ণের খাল, যা দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সংকীর্ণ হয়ে পড়লেও নিয়মিত জোয়ারভাটা খেলে। বাজার-হাট, স্কুল, জীবন ও জীবিকার জন্য হাওড়ার উপরেই বেশি নির্ভর করতে হয় মায়াচরের হাজার পাঁচেক বাসিন্দাকে। যাঁদের রাধাপুরে আসার উপায় বলতে চরে ছড়িয়ে থাকা ২০টি সেতু।

কিন্তু তাতে কী সমস্যা মেটে! কারণ এর মধ্যে মাত্র তিনটি সেতু তৈরি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। একটি ঢালাই সেতু। বাকি দুটি কাঠের। সেতুগুলি বেশ চওড়া এবং দু’ধারে রেলিং থাকায় আপাত নিরাপদ হলেও বাকি ১৭টি সেতুরই হাল খারাপ। দু’দিকে কোনও রেলিং নেই। বিশেষ করে বর্ষায়। খালে জল বাড়লে বিপদের আশঙ্কাও বাড়ে। বৃহস্পতিবার এমনই একটি কাঠের সেতু থেকে খালে পড়ে মারা যায় শুভেন্দু। আর এই ঘটনাই চারপাশ সেতু দিয়ে ঘেরা মায়াচরের মানুষের সমস্যাকে ফের সামনে এনে দিয়েছে।

যদিও এই সতেরোটি সেতু প্রশাসনের তৈরি নয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, মায়াচরে রয়েছে প্রচুর ইটভাটা। সেই সব ভাটার মালিকেরাই নিজেদের প্রয়োজনে কাঠের সেতুগুলি তৈরি করেছেন। ফুট ছয়েক চওড়া সেতুগুলির দু’ধারে কোনও রেলিং নেই। গ্রামবাসীদের কাছেও এই সেতুগুলিই ভরসা। তাঁদের অভিযোগ, শুধু বৃহস্পতিবার নয়, আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে দু’পাশে রেলিং না থাকার জন্য। কিন্তু কোথায় অভিযোগ জানাবেন তাঁরা? প্রশাসনের কোনও নজরই নেই এ দিকে। তাঁদের দাবি, গ্রামবাসীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আরও পাকাপোক্ত সেতু তৈরি করুক পঞ্চায়েত-প্রশাসন।

কী বলছেন মহিষাদল ব্লক প্রশাসনের কর্তারা?

তাঁদের বক্তব্য, তিনটি সেতু করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীরা রাস্তা সংক্ষেপ করার জন্য বাড়ির কাছাকাছি থাকা ইটভাটার সেতুগুলিই বেশি ব্যবহার করেন।’’

বার বার দুর্ঘটনার পরেও সেতুগুলির দুধারে রেলিং দিতে ভাটা মালিকেরাও ব্যবস্থা নেন না কেন?

যে ইটভাটার সেতুতে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই ভাটার মালিক বিদ্যুৎ বৈতালিক বলেন, ‘‘সেতুর দুধারে রেলিং দিলে আমাদের গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। তাই ওটা করা যায় না। তবে বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামের মানুষকে ওই সেতু ব্যবহার করতে নিষেধ করা হবে।’’

অমৃতবেড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান যুগল মান্না বলেন, ‘‘ইটভাটা মালিকেরা তাঁদের প্রয়োজনে সেতু বানিয়েছেন। সাধারণ মানুষ তা ব্যবহার করলে বিপদের ঝুঁকি থাকেই। গ্রামবাসীরা প্রশাসনের তৈরি সেতুগুলি ব্যবহার করতে পারেন।’’

Mayachar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy