Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রামমোহনের ভিটে সংরক্ষণের দাবি

দাঁড়িয়ে রয়েছে কিছু ইটের পাঁজা। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মভিটের অবস্থা এখন এমনই। বহু বছর ধরে নানা আশ্বাস মিলেছে। রামমোহন রায়ের নামে তৈরি হয়েছে একাধিক সংগঠন।

স্মৃতি: অবহেলায় পড়ে রামমোহনের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

স্মৃতি: অবহেলায় পড়ে রামমোহনের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী
খানাকুল শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

দাঁড়িয়ে রয়েছে কিছু ইটের পাঁজা। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মভিটের অবস্থা এখন এমনই।

বহু বছর ধরে নানা আশ্বাস মিলেছে। রামমোহন রায়ের নামে তৈরি হয়েছে একাধিক সংগঠন। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কয়েকটি স্মারক এবং রামমোহন রায়ের নামাঙ্কিত কিছু পার্ক, লাইব্রেরি, হিমঘর ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি খানাকুলে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, রামমোহনের হাতে লাগানো আমবাগান এবং তাঁর জন্মস্থানকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হোক। সংরক্ষণ হোক বসতবাড়ির। কিন্তু সেই দাবিগুলি মেটেনি আজও। দিনে দিনে খসে গিয়েছে বসতবাড়ির ছাদ ও দেওয়াল।

সেই ক্ষোভ নিয়েই সোমবার রামমোহন রায়ের জন্মদিন পালন করল খানাকুলের নানা সংগঠন। এ দিন অবশ্য কিছুটা হলেও আশার কথা শুনিয়েছেন হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান। তাঁর দাবি, ‘‘রামমোহন রায়ের হাতে তৈরি আমবাগানে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তাঁর নামে মিউজিয়াম করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকার অনুমোদন মিলেছে। বসতবাড়ি সংরক্ষণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।’’

রামমোহন স্মৃতিরক্ষা কমিটিগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৬০ সালে রাধানগর-নাঙুলপাড়া ও রঘুনাথপুরে প্রায় ১৪ একর জমি (রামমোহনের পৈতৃক সম্পত্তি) অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। ১৯৭২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় স্মারক হিসাবে রামমোহন লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন তৈরি করে। ২০০২ সালে হুগলি জেলা পরিষদ রামমোহন স্মৃতি ও স্বত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটি তৈরি করে। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে রামমোহনের সমাধি স্থলের অনুকরণে রামমোহন গ্রামীণ পাঠাগার চত্বরে একটি সমাধি স্মারক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বসতবাড়ি সংরক্ষণ এবং রামমোহন রায়কে সামনে রেখে পর্যটনকেন্দ্র তৈরির জন্য আলাদা করে কোনও কাজ হয়নি। এখন জেলা পরিষদের আশ্বাস কবে সত্যি হয় এখন সেটাই দেখার।

রাধানগর পল্লি সমিতির সম্পাদক বাসুদেব বসুর অভিযোগ, “উল্ল্যেখযোগ্য কিছুই কাজ হয়নি। রামমোহনের জন্মস্থান অবহেলিত থেকে গিয়েছে।’’ স্থানীয় রামমোহন অনুরাগী তথা ইতিহাস বিশেষজ্ঞ দেবাশিস শেঠের অভিযোগ, “আগেও প্রচুর প্রতিশ্রুতি এসেছে। কিন্তু রামমোহনের জন্মভিটে সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রামমোহনের জন্মভিটে।” বসতবাড়ি সংরক্ষণের সঙ্গেই আরামবাগের মায়াপুর স্টেশন থেকে খানাকুলের রাধানগর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, রামমোহনের নামে যাত্রিনিবাস ও যুবআবাস তৈরি-সহ দাবিও তুলেছেন
রাধানগরের বাসিন্দারা।

সোমবার রামমোহনের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর গ্রাম রাধানগরে রামমোহন রায় মেমোরিয়াল হলে অনুষ্ঠান করে হুগলি জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠান হয় আরামবাগ মহকুমা লাইব্রেরি এবং রামমোহন লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনেও। রামমোহনের ভগ্ন বসতবাড়ি চত্বরে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ram Mohan Roy House reformation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE