Advertisement
E-Paper

জ্বর-ডেঙ্গির হানা এ বার বৈদ্যবাটিতে

জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়লাডিপো এলাকায়। সেখানে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও পরিষেবা নিয়ে মানুষের ক্ষোভের শেষ নেই। গত বছর শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি মহামারি হয়েছিল। অন্তত চার জনের মৃত্যু হয়।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৬
অরিন্দমের ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ ডেঙ্গির। নিজস্ব চিত্র

অরিন্দমের ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ ডেঙ্গির। নিজস্ব চিত্র

জ্বর-ডেঙ্গির এই ভরা মরসুমে ছাড় পেল না বৈদ্যবাটি। কয়েক দিন ধরে বৈদ্যবাটি পুরসভার কিছু জায়গায় জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। কয়েক জন ডেঙ্গিতেও আক্রান্ত হয়েছেন বলে সাধারণ মানুষের দাবি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত দশ দিনে জ্বরে আক্রান্ত অন্তত ৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাড়াবাড়ি হওয়ায় কয়েক জনকে কলকাতার হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়েছে। নবমীর রাতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাগেরবাগান এলাকার অরিন্দম মান্না ওরফে বাপি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় ডেঙ্গিতে (বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে দেওয়া তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্র সে কথাই বলছে)।

জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়লাডিপো এলাকায়। সেখানে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও পরিষেবা নিয়ে মানুষের ক্ষোভের শেষ নেই। গত বছর শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি মহামারি হয়েছিল। অন্তত চার জনের মৃত্যু হয়। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে জ্বর-ডেঙ্গি ঠেকাতে বৈদ্যবাটি পুরসভা কেন আগাম ব্যবস্থা নেয়নি, এ প্রশ্নও উঠছে।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, বৈদ্যবাটির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভাইরাস-ঘটিত জ্বর হচ্ছে। ৪ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। গত ১১ তারিখ থেকে স্বাস্থ্য দফতরের দল সেখানে যাচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ, সোমবার বৈদ্যবাটি এবং ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধানকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।

বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইনের দাবি, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সমীক্ষা চালাচ্ছেন। গত বছরের আতঙ্ক মানুষের এখনও কাটেনি। সে জন্য জ্বর হলেই ডেঙ্গি বলে দিচ্ছেন।’’

শেওড়াফু‌লি স্টেশনের কাছেই কয়লাডিপো এলাকা। কয়েক দিনে এই এলাকায় অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। শম্ভুনাথ কর্মকার নামে এক ব্যক্তির দাবি, তাঁর দুই ছেলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ছোট ছেলে বুদ্ধদেবকে শ্রীরামপুর ওয়ালশে ভর্তি করনো হয়েছিল। সেখানে বাইরে থেকে টাকা দিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়। পরে অন্যত্র ভর্তি করে প্লেটলেট দেওয়া হয়। প্লেটলেট জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। ওয়ালশের চিকিৎসার মান নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেন।

রবিবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অলিগলিতে ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। তবু সন্তুষ্ট নন মানুষজন। তাঁদের ক্ষোভ, দিন কয়েক ধরে তেল-ব্লিচিং অছড়ানো হলেও আগে ব্যবস্থা নিলে এই পরিস্থিতি হতো না। প্রশান্ত রায়, রুস্তম আলি, শেখ সরফরাজউদ্দিনের মতো কয়েকজন বলেন, ‘‘জ্বরের প্রকোপ যখন বাড়ল, তখন তো মেডিক্যাল ক্যাম্প করা যেত। কিছুই হয়নি।’’ স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানান, জ্বরের প্রকোপের বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরকে কয়েকদিন আগেই জানান।

পুজোর সময়ে কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভোগায় বাগেরবাগানের অরিন্দম মান্নাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। নবমীর দিন সেখানেই মারা যান। কিন্তু ডেঙ্গিতে কোনও মৃ ত্যুর কথা নস্যাৎ করে দেন পুরপ্রধান অরিন্দমবাবু। একই দাবি স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর গোরাচাঁদ শেঠেরও। তবে সিএমওএইচের আশ্বাস, এ নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওয়ালশে নিখরচায় রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

Dengue Malaria fever Water pollution Mosquitoes Baidyabati বৈদ্যবাটি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy