Advertisement
০৬ মে ২০২৪

চাইলেই এ বার বিদ্যুৎ মিলবে হাওড়ায়

গত ২১ জুন হাওড়ার শরৎসদনে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কাজের ক্ষেত্রে সাফল্যের নিরিখে প্রথম সারিতে ছিল জেলার গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ প্রকল্প। বৈঠকে তাঁকে জানানো হয়েছিল জেলায় এই প্রকল্পে ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ।

নুরুল আবসার
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৭
Share: Save:

গত ২১ জুন হাওড়ার শরৎসদনে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কাজের ক্ষেত্রে সাফল্যের নিরিখে প্রথম সারিতে ছিল জেলার গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ প্রকল্প। বৈঠকে তাঁকে জানানো হয়েছিল জেলায় এই প্রকল্পে ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ। সন্তুষ্ট হয়ে বাকি কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ মেনেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। চলতি সপ্তাহেই এই প্রকল্পে ১০০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে আজ, শুক্রবার হাওড়াকে রাজ্যের প্রথম ১০০ শতাংশ গ্রামীণ বিদ্যুদয়িত জেলা হিসাবে ঘোষণা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। জেলা প্রশাসন সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।

গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণের কাজ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা করে করলেও এর জন্য তাদের আলাদা বিভাগ আছে। সেই বিভাগ সূত্রে খবর, হাওড়ায় ১৫৭টি পঞ্চায়েত। গ্রাম ৬৫০টি। ১০০ শতাংশ গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণের অর্থ হল, প্রতিটি গ্রামেই বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে যে কোনও গ্রাহক আবেদন করলেই বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারবেন। পরিকাঠামোও সম্পূর্ণ।

যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, কাজটি সহজে হয়নি। ২০০০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত জেলার বহু গ্রাম ছিল অন্ধকারে। এ বিষয়ে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প আসে। বরাদ্দ হয় বহু টাকা। সব থেকে বড় প্রকল্পটি হল রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পে ২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিকে প্রকল্পে গতি ছিল না। বিভিন্ন জটিলতায় বার বার থমকে যায় কাজ। প্রকল্পের গতি ফেরাতে উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রকল্পের ঠিকা সংস্থা সবার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের কাজ করেন। এই পর্যায়েও ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকল্পের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুলতান আহমেদ। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী বণ্টন সংস্থা এবং জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। জোর কদমে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ।

শেষ পর্যায়ের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের মার্চ মাসে। কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়। বণ্টন সংস্থা থেকে তখনও পর্যন্ত ৮ হাজার ৩৬৪টি বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় কেন্দ্রের কাছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়ে আসে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে। ততদিনে প্রকল্পের নাম বদলে হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ জ্যোতি যোজনা প্রকল্প। টাকা পেয়ে কাজ শুরু করে বণ্টন সংস্থা। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ১৩ হাজার ৪০০টি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তার কথায়, যে সব পরিবার গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁদের প্রত্যেককে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। একটি আবেদনও বকেয়া নেই। শুধু তাই নয়, ১০০ শতাংশ গ্রামে বিদ্যুতৎ সংযোগ চলে যাওয়ায় এখন যে কোনও গ্রামবাসী চাইলেই তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE