আন্দোলন: প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের।
তিন দিনেও পরিস্থিতি বদলাল না গুপ্তিপাড়ার বাঁধাগাছির বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। বৃহস্পতিবারও দিনভর ঘেরাও হয়ে রইলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বেতন মিলছে না, এই অভিযোগে গত মঙ্গলবার থেকে শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। আর টাকা দিয়েও কেন ক্লাস করার সুযোগ মিলছে না, তার প্রতিবাদে পাল্টা আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কলেজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি ঘিরেই ফের সরগরম হয়ে ওঠে কলেজ চত্বর।
পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে অধ্যক্ষ অরিন্দম রায় না আসছেন কলেজে আর না থাকছেন কলেজ পরিচালনার বিষয়ে। তাহলে কেন তিনি কলেজ বন্ধের নোটিস দেবেন? শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের সহায়তা মিলছে না। কর্তৃপক্ষের পাল্টা বক্তব্য, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের একাংশের অসহযোগিতাতেই এমন পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে দেখা গেল, পাঁচ শিক্ষিকা-সহ ৬১ জন ঘেরাও হয়ে রয়েছেন। তাঁরা জানান, মঙ্গলবার থেকে ক্লাস চালুর কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কেউ যোগাযোগ রাখছেন না। ফলে ক্লাস চলবে কী ভাবে? দৈনন্দিন নানা ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁদের নেই। কর্তৃপক্ষ হাল না ধরলে পড়াশোনা শুরু সম্ভব নয়।
এমন পরিস্থিতি হল কেন?
আলোচনায় বসেছেন শিক্ষকরা।
ওই শিক্ষকদের দাবি, বিভিন্ন দাবি নিয়ে গত ১৮ অগস্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। সেখানে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, ১৫ দিনের মধ্যে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হবে। তা হয়নি। অধ্যক্ষও কলেজে আসা বন্ধ করে দেন।
এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরাই ওঁদের পরীক্ষার বন্দোবস্ত করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসছেন না।’’ তাঁরা জানান, দু’জন শিক্ষকের ডিসেম্বর মাসের বেতন আটকে দেওয়া হয়। তবে বাকিরা সময়মতো
বেতন পাচ্ছেন।
এ দিনও ছাত্রছাত্রীরা কলেজের গেটের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন। অধ্যক্ষের অপসারণ এবং কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি ওঠে। চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া অমৃতেন্দু দাস বলেন, ‘‘অবিলম্বে ক্লাস চালু করা হোক। কর্তৃপক্ষ কলেজে আসুন।’’ আন্দোলনকারীদের দাবি, কলেজ চালুর দাবিতে দুই ছাত্রী এবং চার ছাত্র বুধবার থেকে অনশন শুরু করেছেন।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রদীপ চৌধুরীর বক্তব্য, অধ্যক্ষ দক্ষতার সঙ্গে কলেজ চালাচ্ছিলেন। গুটিকতক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী তাঁকে মানছিলেন না। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘অধ্যক্ষকে কাজ করতে দিলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’’
কলেজের এক কর্তার কথায়, ‘‘কলেজে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। স্বাভাবিক পরিস্থিতি নষ্ট করায় দু’জনের এক মাসের বেতন আটকে রাখা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চয়ই বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’
প্রদীপবাবুদের সঙ্গে একটি বেসরকারি গ্রুপ কলেজটি চালায়। প্রদীপবাবু জানান, ওই সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘শীঘ্রই ওদের ক্লাস চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ হুগলি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র খোঁজা হচ্ছে।’’
ছবি: সুশান্ত সরকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy