থমকে রয়েছে সেতুর কাজ। ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।
কয়েক মাসেই ছন্দপতন!
যানজটের জেরে মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ মেটানোর লক্ষ্যে কয়েক মাস আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় কামারকুণ্ডু রেলগেটের উপরে উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন থমকে গিয়েছে সেই কাজ। ফলে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেই কাজ আদৌ শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
রেল এবং রাজ্যের পূর্ত দফতরের যৌথ উদ্যোগে ৩২ কোটি টাকার প্রকল্পটি আগামী বছরের জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা। রেলের অংশে রেল এবং বাকি অংশে পূর্ত দফতর নির্মাণকাজ করবে। এখনও পর্যন্ত শুধু রেলগেটের পূর্ব দিকে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের ধারে কিছু স্তম্ভ তৈরি হয়েছে। তার পরেই থমকে যায় সব কিছু। কোনও তরফেই নির্মাণকাজে কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। এই দেরির কারণে প্রকল্পের খরচ বাড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
কেন থমকে গিয়েছে কাজ?
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে জমিতে উড়ালপুলটি হবে সেখানে কিছু দখলদার এখনও রয়ে গিয়েছেন। তাঁরা না সরায় প্রকল্পের কাজ গতি পাচ্ছে না। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রকল্পটির জন্য যে সময়সীমা ধরা হয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক চললে তার মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া জরুরি। আমাদের যে বিভাগ সেই কাজ করে, তাদের এ নিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।’’ হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, মাঝে উড়ালপুলের দখলদারদের সরাতে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু টাটা প্রকল্পের কাজে পুরো প্রশাসন ব্যস্ত হয়ে পড়ায় বিষয়টি এখন বিলম্বিত হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযেোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানিয়েছেন, কী কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
যে জমিতে উড়ালপুলটি হওয়ার কথা, তার মধ্যে যেমন পূর্ত দফতরের জমি রয়েছে, তেমনই ব্যক্তি-মালিকানাধীন জমিও ছিল। পূর্ত দফতরের জমিতে বহু দখলদার ছিলেন। আবার বহু দোকানদার নিজের জমিতে ব্যবসা করছিলেন। উড়ালপুলের কাজ শুরু হতে পূর্ত দফতরের জমি দখল করে থাকা ব্যবসায়ীরা সরে যান। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র। যে ব্যবসায়ীরা নিজেদের জমিতেই ব্যবসা করছেন, পূর্ত-দফতর এ পর্যন্ত তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি। ফলে, তাঁরা এখনও সরেননি। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘আমরা উড়ালপুলের কাজে বাধা হতে চাই না। আমরাও চাই কাজটা হোক। যানজট কমবে। কিন্তু আমাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের টাকা আগে দিক সরকার। টাকা পেলেই আমরা সরে যাব।’’
রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ পূর্ব রেলের বহু দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখা হয়ে যায়। কামারকুণ্ডু স্টেশনের উপর দিয়ে গিয়েছে হাওড়া-তারকেশ্বর শাখার লাইন। কিন্তু কামারকুণ্ডুতে একবার রেলগেট বন্ধ হলে যানজটে নাভিশ্বাস ওঠে যাত্রীদের। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ওই সড়কপথ বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলির সঙ্গে যোগাযোগেরও অন্যতম মাধ্যম। সেই কারণে ব্যস্ত রেলগেটের উপর উড়ালপুলের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। কিন্তু শুরু হয়েও থমকে গেল উড়ালপুল নির্মাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy