Advertisement
০৩ মে ২০২৪
ঘোড়াবেড়িয়ায় জো়ড়া খুনে গ্রেফতার আরও চার

দ্বীপাঞ্চলে সেতুর দাবি পুলিশেরই

শুক্রবার জোড়া খুনের পরে পুলিশ দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ মেনে নিয়ে পুলিশকর্তাদের দাবি, পাকা সেতু না থাকায় তাঁরা গাড়ি নিয়ে আসতে পারেননি। হেঁটে এবং মোটরবাইকে সাঁকো পেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে।

পরিদর্শনে: জয়পুরের ঘো়়ড়াবেড়িয়ায় নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে মুকুল রায়, ফিরহাদ হাকিম এবং এলাকার সাংসদ সুলতান আহমেদ। ছবি: সুব্রত জানা

পরিদর্শনে: জয়পুরের ঘো়়ড়াবেড়িয়ায় নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে মুকুল রায়, ফিরহাদ হাকিম এবং এলাকার সাংসদ সুলতান আহমেদ। ছবি: সুব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়পুর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

গ্রামবাসীদের দাবি দীর্ঘদিনের। জোড়া খুনের পরে হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ হিসেবে পরিচিত জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা পঞ্চায়েত এলাকায় পাকা সেতুর দাবি তুলল পুলিশই!

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবার ঘোড়াবেড়িয়ায় আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নিহত দলীয় কর্মী শেখ শাহাজান এবং তাঁর ভাই শেখ লালচাঁদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা পাশে থাকার বার্তা দেন। নিহতদের পরিবারের এক জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেন দুই নেতা। এখানেই তাঁদের কাছে কুলিয়াঘাটে পাকা সেতুর দাবি তোলেন পুলিশকর্তারা।

শুক্রবার জোড়া খুনের পরে পুলিশ দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ মেনে নিয়ে পুলিশকর্তাদের দাবি, পাকা সেতু না থাকায় তাঁরা গাড়ি নিয়ে আসতে পারেননি। হেঁটে এবং মোটরবাইকে সাঁকো পেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে। পাকা সেতুর দাবি ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও। মুকুলবাবুর আশ্বাস, ‘‘তাড়াতাড়ি কাজ যাতে শুরু হয়, দেখা হবে।’’

শুক্রবার সকালে শেখ শাজাহানকে বাড়ির কাছেই গুলি করে, কুপিয়ে খুন করে জনা চল্লিশ দুষ্কৃতী। কয়েক মিনিটের মধ্যে একই ভাবে কুলিয়াঘাটে খুন করা হয় তাঁর ভাই শেখ লালচাঁদকেও। সেখানে এসে পড়ায় এক মহিলা এবং এক যুবককেও গুলি করে দুষ্কৃতীরা। হামলার পরে প্রায় দু’ঘণ্টা অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকায় দাপায় দুষ্কৃতীরা। কাছেই ভাটোরাতে পুলিশের তদন্তকেন্দ্র রয়েছে। সেখানে সেই সময় জনাছয়েক পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁরা ভয়ে বেরোননি। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাওড়া (জেলা) গ্রামীণ পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ওই দিনই হামলায় মূল অভিযুক্ত বিলু মল্লিক নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী-সহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার ধরা হয় আরও চার জনকে।

পুলিশ জানায়, বিলু এবং তার দাদা বালা পুরনো শত্রুতার জেরে শাজাহান এবং লালচাঁদকে খুনের ছক কষেছিল। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। জেরাতেই খুনের কারণ জানা যাবে। বাকি দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি চলছে।’’ এ দিন মুকুলবাবুও বলেন, ‘‘তোলাবাজরা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করছিল। আমাদের দলীয় কর্মী শাজাহান এবং লালচাঁদ বাধা দিচ্ছিলেন। তাই তাঁদের খুন হতে হয়েছে। দোষীদের ছাড়া হবে না।’’

এলাকাটি রূপনারায়ণ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী দিয়ে ঘেরা। হাওড়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম কুলিয়াঘাটের বাঁশের সাঁকো। কুলিয়াঘাটে মুণ্ডেশ্বরীতে পাকা সেতুর জন্য শিলান্যাস হয়েছিল ২০০৬ সালে। কিন্তু টাকার অভাবে কাজ হয়নি। ফলে, ওই এলাকায় কোনও দুষ্কর্ম রুখতে বা অপরাধীকে ধরতে যেতে পুলিশকে বেগ পেতে হয় বলে পুলিশকর্তারা মেনে নিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Murder TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE