Advertisement
১৬ মে ২০২৪
তৃণমূলে গোষ্ঠীকোন্দলের জের

পুলিশি নিরাপত্তা নিলেন গোঘাটের পঞ্চায়েত প্রধান

পঞ্চায়েত প্রধান যেখানেই যাচ্ছেন সঙ্গে থাকছেন দু’জন পুলিশ কর্মী। দলীর কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার আশঙ্কায় কয়েক মাস আগে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন গোঘাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বালি পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোঘাট শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত প্রধান যেখানেই যাচ্ছেন সঙ্গে থাকছেন দু’জন পুলিশ কর্মী।

দলীর কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার আশঙ্কায় কয়েক মাস আগে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন গোঘাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বালি পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক রায়। সম্প্রতি জেলা পুলিশ সেটি মঞ্জুর করেছে। তার পর থেকেই প্রধানের সঙ্গে পুলিশ কর্মী থাকছেন।

আরামবাগ এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়। মাঝে মধ্যেই দলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে তেতে ওঠে এলাকা। দলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর হাতে মার খেয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনাও ঘটে। কিন্তু বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় পঞ্চায়েত প্রধানকে পুলিশের নিরাপত্তা নিতে হচ্ছে, এ ঘটনা আরামবাগ মহকুমায় প্রথম।

তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে বন্যার ত্রাণ বণ্টনকে কেন্দ্র করে গোলমাল শুরু। গত ২৪ অগস্ট পঞ্চায়েত থেকে ত্রাণ বণ্টনের দিন নির্দিষ্ট ছিল। কিন্তু ত্রাণ সামগ্রী স্থানীয় দলীয় কার্যালয় থেকে বিলি করার জন্য প্রধানকে চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি বিডিওকে জানান অশোকবাবু। এর পর ২৪ অগস্ট দুপুর থেকে প্রধানকে ঘেরাও করে তৃণমূল সমর্থকদের একাংশ দলীয় কার্যালয় থেকে ত্রাণ বিলি করার দাবি জানান। তখন প্রধানকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। রাত ৮টা নাগাদ বিডিও গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পঞ্চায়েতে নিয়ে আসেন।

অশোকবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বিডিওকে অভিযোগ করার জন্য দলের দিঘরা অঞ্চল সভাপতি প্রভাত অধিকারী-সহ কয়েকজন পঞ্চায়েতে হামলা চালায়।’’ এর পর ২৫ অগস্ট থেকে পঞ্চায়েতে আসা বন্ধ করে দেন অশোকবাবু। প্রধান না আসায় পঞ্চায়েতের দৈনন্দিন কাজ সমস্যা হয়। এর মধ্যে ‘রাজনৈতিক ঝামেলা এবং নিরাপত্তার অভাব’ জানিয়ে তিনি বিডিওর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। যদিও দলীয় নেতৃত্বের অনুরোধে তিনি পদত্যাগপত্র তুলে নেন। তবে পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানান। মাস কয়েক পরে পুলিশ সেই আবেদন মঞ্জুর করল। পুলিশ কর্মী মোতায়েন হওয়ার পর থেকে পঞ্চায়েতে যাওয়া শুরু করেছেন অশোকবাবু।

যদিও দলীয় প্রধানের তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করে দিঘরা অঞ্চল সভাপতি প্রভাতবাবুর দাবি, “দলকে লজ্জায় ফেলতেই তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েও পুলিশ নিরাপত্তা নিয়ে পঞ্চায়েতে যাচ্ছেন।’’

গোঘাটের দলীয় বিধায়ক মানস মজুমদারের ক্ষোভ, “অকারণে সাধারণ মানুষের কাছে খারাপ বার্তা গেল। বন্যায় ত্রাণ বন্টনকে কেন্দ্র করে সামান্য গোলমাল হয়েছিল। সেটি মিটিয়েও দিয়েছিলাম। প্রধানের পুলিশি নিরাপত্তা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’’

যদিও অশোকবাবুর দাবি, ‘‘দলের একটি গোষ্ঠী আমার উপরে হামলা করতে পারে। তাই পুলিশের থেকে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম। পুলিশ যদি কয়েক মাস আগেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতো, তাহলে এত দিন পঞ্চায়েতের কাজ আটকে থাকত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panchayat pradhan Police security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE