Advertisement
E-Paper

টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে প্রহৃত দুই ছাত্র

ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া নিয়ে কয়েক দিন ধরেই শ্রীরামপুর কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিল। সোমবার সেই বিবাদ গড়াল হামলায়। প্রহৃত হলেন টিএমসিপি সমর্থক দুই ছাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০০:২৬

ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া নিয়ে কয়েক দিন ধরেই শ্রীরামপুর কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিল। সোমবার সেই বিবাদ গড়াল হামলায়। প্রহৃত হলেন টিএমসিপি সমর্থক দুই ছাত্র। তাঁদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হামলায় অভিযোগের তির ওই সংগঠন পরিচালিত ছাত্র সংসদের সভাপতি সোনিয়া সিংহ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। সোনিয়া অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক টিএমসিপি নেতা বলেন, ‘‘এখানে আমাদের সংগঠনের পদাধিকারী কয়েকজন যা খুশি তাই সিদ্ধান্ত নেন। সভাপতির কাছে যে কেউ যে কোনও সমস্যার কথা বলতেই পারেন। যাঁরা প্রহৃত হলেন, তাঁরা আমাদেরই সমর্থক। এ ভাবে মারধর করা খারাপ। গোটা ঘটনা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ এ দিনের গোলমালের কথা তাঁর জানা নেই দাবি করে কলেজের অধ্যক্ষ লাল্টলুঅ্যাংগ্লিয়ানা খিয়াংটে বলেন, ‘‘এমন কোনও ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তা হলে তা খারাপ হয়েছে। মঙ্গলবার বিস্তারিত ভাবে খোঁজ নেব।’’

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা, শৌচাগার পরিষ্কার করা-সহ বিভিন্ন দাবিতে ছাত্র সংসদের পদাধিকারীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ঠিকমতো দরবার করছেন না— এই অভিযোগে টিএমসিপি-র কিছু কর্মী ক’দিন ধরেই সরব ছিলেন। গত শুক্রবার তাঁরা শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের কাছেও এ নিয়ে নালিশ জানান। সে কথা কানে যায় সোনিয়া-সহ ছাত্র সংসদের পদাধিকারীদের। অভিযোগ, এর পরেই সোমবার দুপুরে কলেজ-ক্যান্টিনের সামনে সোনিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনের ওই বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয়। চোট পান বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র রাজীব মিশ্র এবং বিকম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বিজয় দাস।

গোলমালের খবর শুনে এ দিন কলেজের সামনে পুলিশ যায়। যদিও কর্তৃপক্ষ না ডাকায় পুলিশ কলেজের ভিতরে ঢোকেনি। এ দিন রাত পর্যন্ত গোলমাল নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি। পুলিশ জানায়, তারা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। অভিযোগ পেলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধায়ক জানান, টিএমসিপি-র জেলা নেতৃত্বকে শ্রীরামপুর কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে ছাত্র সংসদই ঠিক করবে। যদি ফের এমন গোলমাল হয়, তা হলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন বহিরাগত প্রাক্তন কিছু ছাত্রের জন্য অশান্তি হয়েছে কলেজে।’’

বিধায়ক ‘বহিরাগত’দের উপরে দোষ চাপানোয় ক্ষুব্ধ ওই কলেজের বিক্ষুব্ধ টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, কলেজের ছাত্রেরাই যেখানে আক্রান্ত, অভিযুক্ত যেখানে ছাত্র সংসদের পদাধিকারীরা, সেখানে ‘বহিরাগত’রা কোথা থেকে এল। টিএমসিপি-র জেলা সহ-সভাপতি কৌশিক শীল বলেন, ‘‘ওই কলেজে একটা ঘটনা ঘটেছে। তা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো হবে। বিষয়টি সংগঠনের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। আগামী ২৬ অগস্ট এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’

তবে, ঐতিহ্যপূর্ণ কলেজে এমন ঘটনা অবাঞ্ছিত বলে মনে করছেন সেখানকার প্রাক্তন ছাত্র সম্মিলনীর সম্পাদক তথা এলাকার তৃণমূল নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সম্মিলনীর পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু ভাবে পঠনপাঠন চালানোর আবেদন জানানো হবে।’’

গোটা ঘটনায় যাঁর দিকে মূল অভিযোগের আঙুল উঠেছে, সেই সোনিয়া এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি ফোন কেটে দেন। এসএমএসেরও জবাব দেননি। তবে, কলেজের ছাত্র সংসদের পদাধিকারীদের কাজকর্ম নিয়ে জেলা টিএমসিপি-র একাংশ যথেষ্ট বিব্রত। কিছু দিন আগেই এক সন্ধ্যায় কলেজের পাশে গঙ্গার ঘাটে প্রকাশ্যে মদ্যপানের অভিযোগে এক টিএমসিপি নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাঁকে ছাড়ানোর জন্য ছাত্র সংসদের পদাধিকারীদের তদ্বির করা নিয়ে সংগঠনের অন্দরেও প্রশ্ন ওঠে।

Group clash TMCP Serampore college toilet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy