Advertisement
০৩ মে ২০২৪

দেরিতে স্কুলে, ডিএম-এর কোপে প্রধান শিক্ষক

মোটরবাইকে স্কুলে ঢুকছিলেন আমতার বড়মোহরা যতীন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়। জানতেন না স্কুলের সামনে প্রশাসনের কর্তাদের নিজে হাজির জেলাশাসক মুক্তা আর্য। দেরিতে স্কুলে আসার জন্য শনিবার জয়ন্তবাবু জেলাশাসকের কোপে তো পড়লেনই, সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্যেও সতর্কবার্তাজারি হল।           

নুরুল আবসার
আমতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

ঘড়িতে তখন বেলা ১১টা বেজে ৫ মিনিট।

মোটরবাইকে স্কুলে ঢুকছিলেন আমতার বড়মোহরা যতীন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়। জানতেন না স্কুলের সামনে প্রশাসনের কর্তাদের নিজে হাজির জেলাশাসক মুক্তা আর্য। দেরিতে স্কুলে আসার জন্য শনিবার জয়ন্তবাবু জেলাশাসকের কোপে তো পড়লেনই, সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্যেও সতর্কবার্তাজারি হল।

জেলাশাসক পরে বলেন, ‘‘তখন বেলা ১১টার বেশি বেজে গিয়েছিল। প্রধান শিক্ষক তখন স্কুলে ঢুকছিলেন। ছেলেরা স্কুল থেকে বেরিয়ে মাঠে ঘোরাঘুরি করছিল। এটা চলতে পারে না। স্কুলে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। আমি ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা স্কুল পরিদর্শককে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রতিটা স্কুলে শিক্ষকদের সাড়ে ১০টার মধ্যে ঢুকতে হবে। শিক্ষকেরা যাতে ঠিক সময়ে স্কুলে ঢোকেন তা নিয়মিত পরিদর্শন করার জন্য বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে বলা হয়েছে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক শান্তনু সিংহ জেলাশাসককে জানিয়েছেন, জয়ন্তবাবুকে কারণ দর্শানোর চিঠি ধরানো হবে। জয়ন্তবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমি মোটেই ১১টার পরে স্কুলে ঢুকিনি। আমার ঘড়িতে তখন ১০টা বেজে ৪০ মিনিট হয়েছিল। আমাকে যদি কারণ দর্শানোর চিঠি ধরানো হয়, এ কথা জানিয়ে দেব।’’

এ দিন আমতা-১ ব্লকের প্রশাসনিক পর্য়ালোচনা বৈঠক ছিল স্থানীয় কিসান মান্ডিতে। বৈঠকের আগে বড়মোহরা গ্রামে ঘুরে উন্নয়নমূলক কাজ দেখছিলেন জেলাশাসক। কথা বলছিলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। সঙ্গে ছিলেন জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। ছিলেন আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধনঞ্জয় বাকুলি এবং কর্মাধ্যক্ষেরাও। গ্রামে ঘুরতে ঘুরতে সকলে যখন বড়মোহরা যতীন্দ্র বিদ্যাপীঠের কাছে চলে আসেন, তখনই দেখা যায় মোটরবাইকে স্কুলে আসছেন প্রধান শিক্ষক জয়ন্তবাবু। গ্রামবাসীদের কেউ একজন জেলাশাসককে বলেন, ‘‘দেখুন ম্যাডাম, কত বেলা হয়ে গেল। এখন প্রধান শিক্ষক আসছেন।’’ জেলাশাসক তখন ধনঞ্জয়বাবুকে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন। ধনঞ্জয়বাবু প্রধান শিক্ষকেকে দাঁড় করান। দেরিতে স্কুলে আসার কারণ জানতে চান। জয়ন্তবাবু পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন কী হয়েছে?’’ ধনঞ্জয়বাবু তখন বলেন, ‘‘আপনি নিজেই যদি দেরি করে স্কুলে আসেন, তা হলে অন্য শিক্ষকেরা কী করবেন?’’

এরপরে আর কথা বাড়াননি প্রধান শিক্ষক। তিনি সটান স্কুলে ঢুকে যান। জেলাশাসকও প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে অন্য গ্রামে চলে যান। কিন্তু প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকের শুরুতেই বিষয়টি উত্থাপন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। জেলা স্কুল পরিদর্শককে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশদেন জেলাশাসক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Headmaster School Master High School Educaction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE