Advertisement
E-Paper

বিবর্ণ টয় ট্রেন, বিকল জিরাফ

হুগলির সিঙ্গুরে সরস্বতী নদীর তীরে জায়গাটির পোশাকি নাম ‘নিউ দিঘা পর্যটন কেন্দ্র’। পার্কে চড়ুইভাতির সময়ে নেশার সব আয়োজন বন্ধে বড়দিনে এমনই ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন।

দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩২
হতশ্রী: এই টয় ট্রেনই ঘুরল নিউ দিঘায়। নিজস্ব চিত্র

হতশ্রী: এই টয় ট্রেনই ঘুরল নিউ দিঘায়। নিজস্ব চিত্র

কিছুটা অন্তর নোটিস সাঁটা। তাতে লেখা রয়েছে ‘এই পর্যটন কেন্দ্রে মদ্যপান নিষিদ্ধ’। প্রচারের সৌজন্যে— হুগলি জেলা পরিষদ। বারে বারে সাউন্ড বক্সে ঘোষণা করা হচ্ছে মদ্যপান না করার নির্দেশ। নজরদারি চা‌লাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।

হুগলির সিঙ্গুরে সরস্বতী নদীর তীরে জায়গাটির পোশাকি নাম ‘নিউ দিঘা পর্যটন কেন্দ্র’। পার্কে চড়ুইভাতির সময়ে নেশার সব আয়োজন বন্ধে বড়দিনে এমনই ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। তবে তাতেও পুরো কাজ হল না। লুকিয়ে চুরিয়ে মদ্যপান চললই। ইতিউতি শব্দের নির্দিষ্ট ডেসিবেল অতিক্রম করে বাজল সাউন্ড বক্স।

হুগলির পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকেও বহু মানুষ শীতের মরসুমে এই পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসেন। অনেকে দল বেঁধে চড়ুইভাতি করেন। বড়দিন, পয়লা জানুয়ারির মতো দিনগুলিতে ভিড় বাড়ে। প্রায় প্রতি বারেই নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নিউ দিঘায়। সেই কথা মাথায় রেখে এ দিন পুলিশি ব্যবস্থাও ছিল এখানে। বড়দিনের সকালে ওই পর্যটন কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের এক অফিসার বলছিলেন, ‘‘প্রতি বছরেই শীতের মরসুমে শ্লীলতাহানি থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে এখানে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেশাগ্রস্ত যুবকেরা এই সব কাজ করেন। এমন পরিস্থিতি যাতে এ বার তৈরি না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’

পুলিশ-প্রশাসনের এই কড়াকড়িকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকেই। এ দিন ব্যারাকপুর থেকে এসেছিলেন তুলিকা দাশগুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে এখানে আসছি। আগে বক্সে তারস্বরে গান বাজত। কান ঝালাপালা হয়ে যেত। প্রকাশ্যে মদ্যপানও চলত। এ বছর সেসব খুব বেশি চোখে পরছে না। এটা ভাল দিক।’’

তবে ফস্কা গেঁরো অবশ্য ছিলই। নজরদারির ফাঁক গলে কেউ কেউ পানীয়ের বোতলে মদ ভরে নিয়ে এসেছিলেন। সিঙ্গুরের ন’পাড়ার এক দল যুবক এ দিন পার্কের মধ্যেই ঠাণ্ডা পানীয়ের বোতলে মদ্যপান করছিলেন।

অন্যান্য বছরের তুলনায় পার্কের পরিবেশ ভাল ছিল এটা যেমন ঠিক, তেমনই এটাও ঠিক অন্য বড়দিনের তুলনায় এ বার ভিড় ছিল তুলনায় কম। অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় নামে পার্কের এক কর্মীর অনুমান, ‘‘মদ্যপান নিষিদ্ধ করার ফলেই হয়তো অনেকে আসেননি।’’

তবে যাঁরা এসেছিলেন, পার্কের পরিকাঠামো তাঁদের খুশি করতে পারেনি। মদ্যপান বন্ধে প্রশাসন যতটা বেশি সচেতন ততটাই নিষ্পৃহ পার্কের পরিকাঠামো উন্নয়নে। এ দিন পার্কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আবর্জনা জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। প্লাস্টিকের কাপ থেকে পলিথিন— কী নেই সেখানে! প্রবেশপথে আগে একটি যন্ত্রচালিত জিরাফ ঘাড় নাড়ত। যন্ত্র বিকল হয়ে সে এখন নিশ্চল।

টয় ট্রেন চললেও জীর্ণ। চারটি কামরার মধ্যে একটি পুরো বিকল। বাকিগুলির হালও বলার মতো নয়। বোটিংয়ের নৌকোও জৌলুসহীন। আগে সৌন্দর্য্যায়নের জন্য গাছে রং করা হত। এখন সে সবের বালাই নেই। পার্কটি যে বিবর্ণ হচ্ছে, সেটি ওই পার্কের কর্মীরাও মেনে নিয়েছেন। হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমানের দাবি, ‘‘নিউ দিঘার পরিকাঠামো সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’

Toy Train Park News Digha Reformation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy