বৈআইনি নির্মাণের দখলে চলে গিয়েছে উলুবেড়িয়া ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মূল নিকাশি। ছবি: সুব্রত জানা।
বৃষ্টি হলেই নিকাশি বেহালের চিত্র সামনে আসে। ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় স্থানীয় প্রশাসন থেকে নেতামন্ত্রী-কাউন্সিলরকে। সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও মেলে। কিন্তু বাস্তবে কোনও কাজই হয় না। তার এক চিত্র দেখা গেল উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
এই ওয়ার্ডে পুরসভার নাকের ডগাতেই মূল নিকাশি নালা দখল করে দোকান-ঘর তৈরি হচ্ছে। অথচ হুঁশ নেই পুর কর্তৃপক্ষের। নিকাশি নালা দখল করে ঘর তৈরির প্রতিবাদে পুর এলাকার বাসিন্দারা বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনও কাজ হয়নি। নিকাশি নালা উপর ঘর করায় এ বারও বর্ষায় এলাকা জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসকদলের নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ মদতে কাজটি করা হচ্ছে। ফলে পুরসভা সব কিছু জেনেও কার্যত নীরব দর্শক। এলাকায় গিয়ে দেখা, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশির মুখে মুম্বাই রোডের ধারে কয়েকটি দোকান-ঘর তৈরি হচ্ছে। কিন্তু দোকান-ঘরটি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, এলাকার মূল নিকাশিটি প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। প্রায় ২০ ফুট হবে ওই নিকাশি নালা। মাত্র ফুট কয়েক বাদে প্রায় সবটাই দখল হয়ে গিয়েছে। ওই জায়গা দিয়ে জল নিকাশি ঠিকমতো সম্ভব নয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নিকাশি নালাটি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের যদুরবেড়িয়া, মাঝেরআটি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার একমাত্র জল নিকাশির পথ। এ ছাড়া এই নিকাশি নালা দিয়েই উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতাল, কিষান মান্ডি, মহকুমা কৃষি অফিসের জল বের হয়। কিন্তু নালাটির উপরে যে ভাবে নির্মাণকাজ হচ্ছে তাতে গোটা এলাকার জল নিকাশি ব্যাহত হবে। এলাকাবাসীদের আশঙ্কা, এমনিতেই এলাকার নিকাশির অবস্থা বেহাল। তার উপর মূল নিকাশি নালার মুখটাই প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তাই গত বারের থেকে এ বার বর্ষায় দুর্ভোগ বেশি হবে। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক রায়, গৌর নিয়োগী, মোহন অধিকারীদের দাবি, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে অবৈধ নির্মাণটি বন্ধ করুক ও সেটা ভাঙার ব্যবস্থা করুক।’’ এ ব্যাপারে উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান অর্জুন সরকার বলেন, ‘‘এই ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে আসার পরেই এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। দোকানঘরটি অবৈধভাবে তৈরি হচ্ছে দেখে ভাঙার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন ভাঙা হয়নি সেটা দেখছি।’’
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির অঞ্জনা অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘আমি পুরসভা, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছি সমস্যা মেটানোর জন্য। কিন্তু পুরসভা কর্ণপাতই করেনি। শাসকদলের লোক জড়িত দেখে পুরসভা শুধু সেটা ভাঙার নির্দেশ দিয়েই দায় সেরেছে। তারপর বারবার বলা হলেও আর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ দলের লোকেদের জড়িত থাকা প্রসঙ্গে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এর সঙ্গে দলের লোকের জড়িত আছে কি না খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy