থাকার কথা তিন জন কর্মী। আছে মাত্র এক। এই ঢাল, তলোয়ারহীন অবস্থায় চলছে জগৎবল্লভপুর ব্লকের মৎস্য দফতর। পরিষেবা না পেয়ে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
তাঁদের ক্ষোভ, জল ও মাটি পরীক্ষা সময় মতো হয় না। যদিও বা জল, মাটি পরীক্ষা হয়, তার রিপোর্ট সময় মতো মিলছে না। কোনও প্রয়োজনে মাছ চাষিরা আধিকারিকদের ডেকেও পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ।
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ওই দফতরে কর্মীর অভাব তো রয়েছে। খাতায় কলমে একজন ফিশারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট রয়েছেন। কিন্তু তাঁকে গত দেড় বছর ধরে জেলা মৎস্য অফিসে কাজের জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে। আরও অনেক পদ শূন্য রয়েছে। এক জন কর্মী এবং ব্লক মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিকই এখন ভরসা। ব্লকের এক কর্তা অভিযোগ করেন, ‘‘সমস্যার কথা জেলা মৎস্য দফতরকে বারবার জানালেও তারা গুরুত্ব দেয়নি।’’ একই অভিযোগ জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমানেরও। এমনকী বিডিও-র তরফ থেকেও লিখিতভাবে জেলা মৎস্য দফতরকে জানালেও কাজ হয়নি। কর্মী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা মৎস্য আধিকারিক অম্বালিকা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘জেলার প্রয়োজনেই ফিশারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্টকে তোলা হয়েছিল। সময় মতো ওই কর্মীদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’ কিন্তু কবে? তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এই অবস্থা শুধু জগৎবল্লভপুরের নয়। আমতা ১ ও আমতা ২ ব্লকেও সমস্যাটি রয়েছে। মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে মৎস্য চাষ বাড়াতে সরকার প্রতিটি ব্লকে একটি করে পুকুরের জল ও মাটি পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। উদ্দেশ্য— মাছ চাষিরা যাতে আরও বেশি করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারে উৎপাদন বাড়াতে পারেন। মাছের কোনও সমস্যা হলে দ্রুত পুকুরের জল, মাটি পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা তার সমাধান বাতলে দেবেন বা যে কোনও সমস্যায় মৎস্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ফিসারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁরা জল, মাটি পরীক্ষা করেন। তা ছাড়া বর্তমানে রাজ্য সরকার একাধিক প্রকল্প মৎস্য চাষিদের জন্য এনেছে। সে সব ক্ষেত্রে উপভোক্তা নির্বাচন থেকে শুরু করে নানাবিধ কাজ তাঁদের করতে হয়।
কিন্তু কর্মী কম থাকার কারণে এলাকার মৎস্য চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। জগৎবল্লভপুর ব্লক এলাকায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জলাভূমি রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ হেক্টরের বেশি জলাভূমিতে ব্যবসায়িকভাবে মাছ চাষ হয়। বাকি জলাভূমির সিংহভাগ অংশেও মাছ চাষ হয় বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। পাঁচশোর বেশি মাছ চাষি রয়েছেন।
মাজু এলাকার এক চাষি গোপাল মণ্ডল বলেন, ‘‘বারবার ব্লক মৎস্য দফতরে গিয়েও বেশিরভাগ সময় কর্মীদের দেখা মেলে না। জল-মাটি নিয়ে গিয়েও ফিরে আসতে হয়। আবার তা দিয়ে এলে সময় মতো পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ব্লক অফিস থেকে বলা হয়, বৈঠকে চলে গিয়েছেন কর্মীরা। আমরা প্রশাসন এখানে দ্রুত কর্মী নিয়োগ করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy