তর্ক-বিতর্ক: চায়ের কাপ হাতে রাজনীতির আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
এখানে সব প্রশ্নেই তর্ক-বিতর্ক জমে। মোহনবাগান না ইস্টেবেঙ্গল? মেসি বড় না রোনাল্ডো? অমিতাভ না শাহরুখ? মমতা-মোদী তো আছেই। শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট-পর্ব। রাজনীতির তর্ক আরও প্রবল হচ্ছে এখানে। ঠিকানা—চায়ের দোকান। আজ বৈঁচীর কোঁচমালির জিটি রোডের ধারে স্বপন দে-র চায়ের দোকান। শুনলেন সুশান্ত সরকার।
উন্নয়ন নিয়ে সব দলেরই প্রচার তুঙ্গে। বিলি হচ্ছে প্রতিশ্রুতি। স্বপনের চায়ের দোকানেও সেই উন্নয়ন নিয়েই আলোচনা। তর্ক কম, চায়ের গ্লাস নিয়ে নানা দাবি তুললেন ক্রেতারা।
দিবস মজুমদার (বেসরকারি সংস্থার কর্মী): উন্নয়নের মানসিকতা থাকলেই উন্নয়ন করা যায়। আমরা চাই যে-ই জিতুন, তিনি যেন আমাদের এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারে সংসদে দাবি জানান। বৈঁচীতে ভাল হাসপাতাল নেই, খেলার মাঠ নেই। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের রেলগেট পেরিয়ে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে বা ১৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। যাত্রাপথে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন রোগী।
সবজান আলি (কৃষক ): ভোট আসে, ভোট যায়। কিন্তু আমাদের এলাকার কোনও উন্নয়ন হয় না। বেড়েলার রাস্তাটি বেশ কয়েক বছর ধরে খারাপ। বর্ষার সময় চলা যায় না।
শেখ হাবিবুল্লাহ (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক): আমাদের এখানে মুল সমস্যা যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাস্তাঘাট খুব খারাপ। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাদা হয়ে যায়। যিনিই জিতুন, তিনি যেন এই বিষয়টায় নজর দেন। আসলে এলাকাটি হুগলি ও বর্ধমান জেলার মধ্যস্থল। তবে এটাও ঠিক, রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামের রাস্তা ঢালাই হয়েছে। এমনকি রাস্তার মোড়ে মোড়ে আলো বসিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে জনসংখ্যা বাড়ছে। আরও উন্নয়নের কাজ করতে হবে।
সবজান: যে কোনও কাজ পরিকল্পনা করে করলেই সমাজের উন্নয়ন হয়। এই এলাকাটি কৃষিপ্রধান। কিন্তু এখানকার কৃষকেরা ন্যায্য দামে তাঁদের ফসল বিক্রি করতে পারেন না। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার চুপ। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের যৌথ ভাবে কৃষকদের জন্য আরও ভাবা উচিত। আলু থেকে পেঁয়াজ— ফলন হলেও চাষি আজও বঞ্চিত। এখনে ভাল স্কুল নেই। রাজ্য সরকার বৈঁচীতে কলেজ করলে তো এলাকার ছেলেমেয়েদের উপকার হয়।
দিবস: সরকার যে-ই গঠন করুন, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা একটু ভাবলেই হবে। আসলে ভোট এলে নেতানেত্রীরা সাধারণ মানুষের কাছে আসেন। তারপরে সবই ভুলে যান। আমরা চাই পরিকল্পনা করে উন্নয়ন হোক। এতে সমাজের কল্যাণ হবে।
সুজয় মজুমদার (ব্যবসায়ী): ভোটের সময়ে প্রচুর প্রতিশ্রুতি দেয় সব রাজনৈতিক দলই। কিন্তু ভোটের পরে তা কার্যকর হয় না। আমরা শুধুই প্রতিশ্রুতি নিয়ে থাকি।
রামব্রিজ সরকার (চাষি): এলাকায় কোনও কাজই হয়নি। ভোটের সময় গরিবদের উন্নয়নের কথা শুনি। তারপর গরিব-দরদি নেতাদের দেখা যায় না। এ বার ভোট চাইতে এলে প্রার্থীকে প্রশ্ন করব। গরিব স্কুল-পড়ুয়াদের সাইকেল দিয়েছে সরকার। খারাপ রাস্তা দিয়ে সেই সাইকেল চলে না। আমরা চাই,যাকে ভোট দেব, জিতে তিনি যেন এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy