Advertisement
০৩ মে ২০২৪
তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর পাল্টা সভা

সাজদা আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে বাউড়িয়ায় কর্মিসভা ইদ্রিশের

লোকসভা ভোটের সঙ্গে রাজ্যে যে দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে তার একটি উলুবেড়িয়া পূর্ব। শুক্রবার সেখানে ভোট প্রচারের শুরুতেই হোঁচট খেল রাজ্যের শাসকদল।

বাউড়িয়ার কর্মিসভায় ইদ্রিশ

বাউড়িয়ার কর্মিসভায় ইদ্রিশ

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০২:১৪
Share: Save:

শুরুতেই হোঁচট!

লোকসভা ভোটের সঙ্গে রাজ্যে যে দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে তার একটি উলুবেড়িয়া পূর্ব। শুক্রবার সেখানে ভোট প্রচারের শুরুতেই হোঁচট খেল রাজ্যের শাসকদল। সামনে এল গোষ্ঠী-কোন্দল। প্রার্থী ইদ্রিশ আলিকে নিয়ে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী বাউড়িয়ায় কর্মিসভার আয়োজন করেছিল। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আর এক গোষ্ঠী উলুবেড়িয়া কলেজের কাছে পাল্টা সভা করল। প্রশ্ন উঠল দলের গ্রামীণ জেলা সভাপতির ভূমিকা নিয়ে। ইদ্রিশের জন্য চাপানো হল শর্ত!

ইদ্রিশকে প্রার্থী করা নিয়ে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশের অসন্তোষ চাপা থাকেনি। তাঁরা ‘বহিরাগত’ ইদ্রিশকে মানতে চাইছেন না। উলুবেড়িয়া কলেজের কাছে পাল্টা সভার অন্যতম আয়োজক, পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান আব্বাসউদ্দিন খানের অভিযোগ, ‘‘এই বিধানসভা কেন্দ্রের সভাপতিকে অনুরোধ করা হয়েছিল, প্রার্থী হিসেবে এলাকার পাঁচ-ছ’জনের নাম দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে। তা হয়নি বলেই নেত্রী বহিরাগতকে পাঠিয়েছেন। নেত্রী স্থানীয় নাম পেলে তাঁর মধ্যে থেকেই কাউকে প্রার্থী করতেন।’’

বাউড়িয়ায় ইদ্রিশের জন্য কর্মিসভা ডেকেছিলেন ওই বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় সভাপতি বেণু সেন। তিনি এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে সেখানে হাজির হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায় পাল্টা সভার দিকে ইঙ্গিত করে সভায় বলেন, ‘‘দলের সভাপতি ছাড়া কারও ডাকা বৈঠকে কোনও কর্মী যাবেন না। ফিরহাদ হাকিম (মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষকও) বলেছেন, যে সব কাউন্সিলরের ওয়ার্ডে বিধানসভা বা লোকসভার প্রার্থী হারবেন সেই কাউন্সিলর পরের পুরভোটে টিকিট পাবেন না।’’

কিন্তু ওই সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই সন্ধ্যায় পাল্টা সভা হয়। উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন কাউন্সিলর এবং উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের রঘুদেবপুর ও খলিসানি পঞ্চায়েতের কয়েকজন প্রাক্তন ও বর্তমান‌ সদস্যেরাও। প্রসঙ্গত, এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আছে উলুবেড়িয়া পুর এবং ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকা।

পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যানের অভিযোগ, ২০১১ সালে এবং ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছিল হায়দর আজিজ সফিকে (সফির মৃত্যুতেই উপ-নির্বাচন হচ্ছে)। তিনি কলকাতায় থাকতেন। এলাকার আসতেন কালেভদ্রে। ফলে, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী-সহ কিছু প্রকল্পে বিধায়কের শংসাপত্র পেতে নাকাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। সেই কারণেই তাঁরা স্থানীয় কাউকে প্রার্থী চেয়েছিলেন বলে ভাইস-চেয়ারম্যানের দাবি। পাল্টা সভার আর এক উদ্যোক্তা তথা কাউন্সিলর ইনামুর রহমান দু’টি দাবি তুলেছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটি গড়ে ভোট পরিচালনা এবং প্রার্থীকে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন উলুবেড়িয়ায় বসতে হবে। ইনামুর বলেন, ‘‘দু’টি শর্ত মানা না-হলে দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কাছে গিয়ে জানাব।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুলকবাবু বলেন, ‘‘প্রার্থী ঠিক করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য সেই প্রার্থীর জন্য লড়াই করা। এর বাইরে আর কোনও কথা হতে পারে না। আর নির্বাচনী কমিটি তো অবশ্যই হবে।’’ আর ইদ্রিশ বলেন, ‘‘আমাকে যাঁরা চেনেন তাঁরা জানেন, মানুষের সঙ্গে কী ভাবে মিশি। আমি এই এলাকার নেতাদের বলেছি, আমার জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা করতে। প্রয়োজন হলে সপরিবারে এখানে থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Politics Sajda Ahmed Idris Ali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE