আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ উজিয়ে তারা এসেছিল হাতিয়ার কিনতে। যেমন এর আগেও দু’বার মুর্শিদাবাদে এসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বার বমাল ধরা পড়ে গেল কেরলের একটি গ্যাংয়ের দুই সদস্য। শুক্রবার, ষষ্ঠীর গভীর রাতে তাদের গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার অফিসাররা।
কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ শনিবার বলেন, ‘‘ধৃত আবু বকর সিদ্দিকি ওরফে নুর শাহ ও সিহাবউদ্দিন ওরফে হরিশ কেরলের কাসারাগড়ের মঞ্জেশ্বর এলাকার লোক। তাদের কাছ থেকে দু’টি পিস্তল ও তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।’’
ওই দু’টি পিস্তল মুর্শিদাবাদের এক অস্ত্র কারবারির কাছ থেকে তারা মোট ৩৫ হাজার টাকায় কিনেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। ওই দু’জন কেরল থেকে দিন পাঁচেক আগে এই রাজ্যে এসে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিল। অস্ত্র নিয়ে ফেরার পথেই তারা ধরা পড়ে যায়। ধৃতদের জেরা করে রাজ্যের ওই অস্ত্র কারবারির হদিস পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ধৃত আবু বকরের বয়স ২৬ ও সিহাবউদ্দিনের ২৪ বছর। তারা কেরলের এমন একটি গ্যাংয়ের সদস্য, যেটি খুন, তোলাবাজি, চোরাচালানের বহু মামলায় জড়িত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য শীঘ্রই কেরল পুলিশের একটি দল কলকাতায় আসছে।
উৎসবের মরসুমে রাস্তায় নেমে যানবাহন চলাচল ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলানোর পাশাপাশি পুলিশ এখন গোয়েন্দা-তথ্য সংগ্রহেও উদ্যোগী। এরই মধ্যে খবর আসে, হাওড়া ব্রিজের কাছে দু’জন যুবকের কাছে ‘মেশিন’ আছে আর তারা মালয়ালম ভাষায় কথা বলছে। ওই খবর পেয়েই গুন্ডা দমন শাখার অফিসাররা তড়িঘড়ি পৌঁছন সেখানে।
ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।। সেই সময়ে বেগতিক দেখে হাওড়া স্টেশনের দিকে পালাতে শুরু করে দুই দুষ্কৃতী। গোয়েন্দারা তাদের পিছু ধাওয়া করে তাদের ধরে ফেলেন।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, উদ্ধার হওয়া দু’টি নাইন এমএম পিস্তলই বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি। তবে তাদের কাছে গুলি পাওয়া যায়নি। তাদের সম্ভবত অন্য জায়গা থেকে গুলি কেনার কথা ছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
শুক্রবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।