Advertisement
০২ মে ২০২৪
ফের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন হুগলিতে

মাথায় গুলি, যুবক নিহত শ্রীরামপুরে

খুনের কারণ নিয়ে পুলিশ ধন্দে। অন্ধকারে মন্টুর পরিবারের লোকেরাও। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, গত ৩০ এপ্রিল ওই এলাকারই বাসিন্দা অজয় রায়ভৌমিক ওরফে দেবু গুলিতে খুন হন।

ঘটনাস্থল: এখানেই খুন হন অতনু। ছবি: প্রকাশ পাল

ঘটনাস্থল: এখানেই খুন হন অতনু। ছবি: প্রকাশ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

দু’মাস আগেই শ্রীরামপুরের বিবিরবেড় এলাকায় ঘরের মধ্যে স্ত্রী-মেয়ে এবং মায়ের সামনে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে, বোমা মেরে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে ওই এলাকাতেই রাস্তার মধ্যে এক যুবককে মাথায় গুলি করে খুন করা হল।

পুলিশ জানায়, নিহতের নাম অতনু ঘোষ ওরফে মন্টু (২২)। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শ্রীরামপুর-সহ গোটা হুগলিতে যে ভাবে খুনের ঘটনা বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বহাল থাকায় নতুন পুলিশ কমিশনারেট গড়ে কী লাভ হল, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী।

খুনের কারণ নিয়ে পুলিশ ধন্দে। অন্ধকারে মন্টুর পরিবারের লোকেরাও। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, গত ৩০ এপ্রিল ওই এলাকারই বাসিন্দা অজয় রায়ভৌমিক ওরফে দেবু গুলিতে খুন হন। ওই ঘটনার সঙ্গে মন্টুর আক্রান্ত হওয়ার যোগ থাকতে পারে। তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দু’টি ঘটনাস্থলের মধ্যে দূরত্ব মেরেকেটে ৫০০ মিটার।

মন্টু কাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, আততায়ীরা মন্টুর পরিচিত। যে কারণে তারা ডাকামাত্রই তিনি এগিয়ে যান। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিবিরবেড়ে মন্টু ভাড়া থাকতেন। কাছেই তাঁর মামা-মাসিরা থাকেন। বছর কয়েক আগে বিয়ে করেন। আগে কাপড়ের দোকানে কাজ করলেও ইদানীং কিছু করছিলেন না। স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্য ছিলেন। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রাস্তার ধারেই ক্লাবের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্টু।

অভিযোগ, সেই সময় তিন দুষ্কৃতী এসে তাঁর নাম ধরে ডাকে। মন্টু এগিয়ে যেতেই পাশের নলকূপের সামনে দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথার পিছন দিকে গুলি করে বাইকে চেপে দিল্লি রোডের দিকে পালায়। আশপাশের কিছু যুবক এবং বাড়ির লোক অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মন্টুকে মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রীরামপুর থানার আইসি নন্দদুলাল ঘোষ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের বক্তব্য, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, তিন জন দুষ্কৃতী এসেছিল। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঘটনার পিছনে আর কারও হাত আছে কিনা, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।

রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তাঘাট কার্যত অন্ধকার, সুনসান। রাতেই নিহতের পরিবারের তরফে শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মন্টুর দাদু চিত্তরঞ্জন দে বলেন, ‘‘মন্টুর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। কেন এমন হল, বুঝতে পারছি না।’’

আতঙ্কের হুগলি


১৩ জানুয়ারি: চুঁচুড়ার মিলনপল্লিতে বাড়ি ফেরার পথে গুলিতে জখম কিশোর।


১৮ জানুয়ারি: বলাগড়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত কারখানার ১ রক্ষী, আহত ১।


২২ জানুয়ারি: চুঁচুড়ার কপিডাঙায় যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার।


১৪ ফেব্রুয়ারি: শ্রীরামপুরের প্রভাসনগরে বোনকে খুন করে দাদা পলাতক।


৫ মার্চ: চন্দননগরের হরিদ্রাডাঙায় দুষ্কৃতীদের গুলির বিনিময়ে আহত যুবক।


৯ মার্চ: চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি-বোমা। নিহত ব্যবসায়ী। আহত ১।


২১ মার্চ: হুগলির কানাগড়ে রাতে পুলিশ সেজে বাড়িতে ঢুকে হকারকে গুলি করে খুন।


৩০ এপ্রিল: শ্রীরামপুরের বিবিরবেড়ে দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত ১।


৩ মে: গুপ্তিপাড়ায় দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াইয়ে মৃত ১।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE