Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Coronavirus

বাড়ির কাছে তাঁবু খাটিয়ে নিভৃতবাসে ১৯

বাড়িতে না-ঢুকে মুম্বই থেকে ফেরা দোগাছিয়ার ১৯ জন শ্রমিক গ্রামের কাছেই ওই তাঁবু-নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন।

মহারাষ্ট্র থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁবু। পোলবায়। —নিজস্ব িচত্র

মহারাষ্ট্র থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁবু। পোলবায়। —নিজস্ব িচত্র

সুশান্ত সরকার
পোলবা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০১:২৫
Share: Save:

কলাবাগানে‌ তাঁবু পড়েছে। পাশাপাশি চারটে।

তাঁবুতে আলো জ্বলছে। পাখা ঘুরছে। মোবাইল চার্জ হচ্ছে। রান্নাবান্নাও সমান তালে চলছে।

কোনও ট্যুরিস্ট স্পট নয়। পোলবার সুগন্ধা পঞ্চায়েতের দোগাছিয়া গ্রামের কলাবাগানে ওই তাঁবু পড়েছে নিভৃতবাসের জন্য।

বাড়িতে না-ঢুকে মুম্বই থেকে ফেরা দোগাছিয়ার ১৯ জন শ্রমিক গ্রামের কাছেই ওই তাঁবু-নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের এ ভাবে থাকা। প্রথম দিন বিকেলেই কালবৈশাখী হয়েছে। তাতে অবশ্য তাঁবুর ক্ষতি হয়নি। ১৪ দিন এ ভাবেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই শ্রমিকেরা। পাশে পেয়েছেন ব্লক প্রশাসনকে। ভয় শুধু একটাই, সাপের। সে জন্যও ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা।

অচিন্ত্য পাত্র নামে ওই দলে থাকা এক শ্রমিক বলেন, ‘‘বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। স্ত্রী-সন্তান আছে। আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছি। তবু সাবধানের মার নেই। তাই একটু আলাদা থাকছি। যে ভাবে করোনা ছড়াচ্ছে, তাতে ভয় লাগছে।’’ প্রায় একই বক্তব্য মঙ্গল ধারা নামে আর এক শ্রমিকের।

ওই শ্রমিকেরা মুম্বইয়ের সোনাপট্টি জহুরি বাজারে সোনা পালিশের কাজ করতেন। বুধবার বিশেষ ট্রেনে ফেরেন। ফিরেই পোলবা গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়। সেখানেই নিজেদের আলাদা থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন অচিন্ত্যরা। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের জন্য তাঁবু পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ অবশ্য নিজেদের ঘর থেকেই নিয়েছেন ওই শ্রমিকেরা। কারও ঘর থেকে খাবার আসছে। কেউ নিজেই রান্না করছেন। প্রশাসনও খাবার দিচ্ছে। তাঁবুর পাশেই শ্রমিকেরা নিজেদের জামা-কাপড় ধুয়ে নিচ্ছেন।

দিলীপ মালিক নামে আর এক শ্রমিক বলেন, ‘‘লকডাউনে ওখানে কাজ ছিল না। খুবই কষ্টে ছিলাম। ঠিকমতো খাবারও জুটত না। তাই ফিরে এলাম। নাই বা বাড়ি ঢুকলাম। তাঁবুতে কোনও অসুবিধে হচ্ছে না। রাতে তাঁবুর পাশে কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়ে দিচ্ছি। তাতে সাপের ভয় অনেক কম।’’

পোলবা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রশান্ত গোল জানিয়েছেন, ওই এলাকার ৪০ জনেরও বেশি মানুষ মহারাষ্ট্রে কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন ফিরেছেন। তাঁদের থাকার মতন ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। খাবারও দেওয়া হচ্ছে। ওই শ্রমিকদের মানসিকতা শেখার মতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Covid-19 Migrant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE