শীত যেতে না যেতেই মশার আক্রমণে অতিষ্ঠ আরামবাগ শহরের মানুষ। সারাদিন কামড় চলছেই, তার উপর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই ঝাঁকে ঝাঁকে বাড়ছে মশা। অবস্থা এমনই যে কথা বলতে গেলে নাকে-মুখে ঢুকে যাচ্ছে মশা। মশা-সন্ত্রাস থেকে রেহাই পেতে বেড়ে গিয়েছে বাজার চলতি মশা মারার বিভিন্ন ধূপ ওষুধ, তেলের বিক্রি। শীতের মরসুম চলে গেলে মশার উপদ্রব বাড়ে এটা জানা সত্ত্বেও কেন আগে থেকে পুরসভার তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয় না তা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।
শহরবাসীর ক্ষোভ, সংস্কারের অভাবে পুর এলাকার নিকাশি নালাগুলিতে বছর ভর জল জমে থাকায় সেগুলি মশার আঁতুড়ঘর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগের বাস পরিচালিত পুরসভার পক্ষ থেকে তবুও নিকালি নালাগুলিতে মশা মারার তেল, ব্লিচিং পাউডার স্প্রে ও ছড়াতে দেখা যেত। কিন্তু পুরসভার হাত বদলের পর সে সব দূরঅস্ত। যদিও তৃণমূল পরিচালিত আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দীর দাবি, ‘‘মশা মারার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, নিকাশি নালাগুলি সংস্কারের কাজ চলছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিকাশনালা তৈরি করা হচ্ছে। কাজ শেষ মশার উপদ্রব স্থায়ীভাবেই অনেকটা কমবে।
পুর চেয়ারম্যানের এমন দাবিতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ বর্মন, অরিন্দম হালদার, কাকলি গুপ্তর কথায়, ‘‘সারাদিনই মশারি টাঙিয়ে রাখতে হচ্ছে। মশা মারার ধূপ জ্বালিয়েও তেমন কাজ হচ্ছে না। কতা বলতে গেলে মশা মুখে ঢুকে যাচ্ছে। কামড়ে প্রাণ অতিষ্ঠ হওয়ার জোগাড়।’’
মশা নিধনে আরামবাগ পুরসভার গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আরামবাগ শহরের ১৯টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ৬০ হাজারের উপর। পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার কামড়ে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ আরামবাগের প্রতি বছরের চিত্র. খোলা নর্দমাগুলো নিয়েও কোনa ব্যবস্থা নেওয়া হয় ন. স্বাস্থ্য বিধি নিয়ে আরামবাগ পুরসভা উদাসীন।
মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বর নিয়ে নিয়মিত ভাবে রোগী ভর্তি হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়াও পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি বছর মশা মারার নানা কলাকৌশল নিয়ে আরামবাগ পুরসভায় বৈঠক হওয়ার রেওয়াজ বজায় থাকলেও তার কার্যকারিতার সুফল যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না, মশা নিধনে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগই তার প্রমাণ।
মশা মারতে পুরসভা কী পদক্ষেপ নেয় পুরসভা?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিভাপ-বেটেকস্-অ্যাবেট ইত্যাদি ওষুধ ছড়িয়ে মশার ডিম মারার কথা। আর পাইরেগ্রাম ওষুধ কেরোসিন তেলের সঙ্গে ছড়িয়ে মশা মারার কথা। অভিযোগ, নিয়মিত এ সব করা তো দূরের কথা, খালি ভিভাপ ওষুধ মাঝেমধ্যে ছড়ানো হয়। তা ছাড়া পুরসভার নিজস্ব মশা মারার সরঞ্জামও যথেষ্ট নেই। ১৯টি ওয়ার্ডের জন্য ১৪টি স্প্রে মেশিন ছিল। তার মধ্যে খান তিনেক বিকল হয়ে পড়ে। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, খুব শীঘ্রই স্প্রে মেশিন-সহ আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে। তা ছাড়াও মশার প্রাদুর্ভাব কমাতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।
অলঙ্করণ: নির্মাল্য প্রামাণিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy