Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নিষিদ্ধ বাজি চলবে না, শ্রীরামপুরে জোর প্রচার

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত জানান, ২০১১ সাল থেকে কালীপুজো এবং দীপাবলির দিন নাগরিক অভিযোগের জন্য চব্বিশ ঘণ্টা তাঁদের কন্ট্রোল রুম খোলা থাকে। শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগ পেলে পুলিশকে বলা হয়।

প্রচার: চলছে লিফলেট বিলি। নিজস্ব চিত্র

প্রচার: চলছে লিফলেট বিলি। নিজস্ব চিত্র

 নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৬
Share: Save:

ফি-বছর কালীপুজোর সময়ে শব্দবাজির আওয়াজে অতিষ্ঠ হন বহু মানুষ। পুলিশ নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিলেও শব্দবাজির দাপট বন্ধ হয় না। কিন্তু এ বার বাজি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উৎসাহিত বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন। গত কয়েক বছরের মতো এ বারেও শ্রীরামপুরে শব্দবাজি এবং ক্ষতিকর আতসবাজি বন্ধ করতে পথে নেমেছে বেশ কয়েকটি নাগরিক সংগঠন। শনিবার তারা মিলিত ভাবে এ ব্যাপারে প্রচার করে। লিফলেট বিলি করা হয়।

ওই সব সংগঠনের দাবি, শব্দবাজি তৈরি বন্ধ করা হোক। দূষণ হয়, এমন আতসবাজির ক্ষেত্রেও পুলিশ-প্রশাসন নজরদারি চালাক। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে আইন মোতাবেক গ্রেফতার করা হোক। ডিজে বাজানো নিয়েও সোচ্চার হয় তারা। উদ্যোক্তাদের পক্ষে গৌতম সরকার বলেন, ‘‘বছরভর নানা অনুষ্ঠানে ডিজে বাজানো এবং বাজি ফাটানো নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে বলবৎ হওয়া নিষেধাজ্ঞা বছরভর কার্যকর করা হোক। না হলে আনন্দের নামে এক ধরনের অত্যাচার বাড়তেই থাকবে। শুধু মানুষ নয়, পশুপাখির ক্ষেত্রেও শব্জবাজি বা ডিজে-র দাপট অসহনীয়।’’ তিনি মনে করেন, পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং প্রশাসন সক্রিয় হলে শব্দবাজি বা ডিজে-র সমস্যা থাকবে না।

সুপ্রিম কোর্ট এ বার বাজি পোড়ানোর সময়সীমা দু’ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছে। পরিবেশবান্ধব (গ্রিন) বাজি ব্যবহারের কথাও বলেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু অনেক সাধারণ মানুষেরই প্রশ্ন, আদপেই কি বন্ধ হবে শব্দদানবের তাণ্ডব? মানা যাবে আদালত নির্ধারিত সময়সীমা? পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এটা বড় চ্যালেঞ্জ।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত জানান, ২০১১ সাল থেকে কালীপুজো এবং দীপাবলির দিন নাগরিক অভিযোগের জন্য চব্বিশ ঘণ্টা তাঁদের কন্ট্রোল রুম খোলা থাকে। শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগ পেলে পুলিশকে বলা হয়। পুলিশ ব্যবস্থা ন‌িল কিনা, তা ‘মনিটরিং’ করা হয়। গত বছর ১১৭টি অভিযোগ তাঁদের কাছে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। নববাবুর কথায়, ‘‘নাগরিক সচেতনতা তো বটেই, বেশি জরুরি পুলিশ-প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট থানার আইসি বা ওসি-র উপরে বর্তাবে। কোথাও এমন হলে আইসি বা ওসি-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আমরা কোর্টের দ্বারস্থ হব।’’

মনোবিদ সুদীপ বসু বলেন, ‘‘শব্দবাজির জন্য শরীরে অতিরিক্ত অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণে হার্টবিট বেড়ে যায়। অস্বস্তি হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিরক্তি তৈরি হয়। খোলামেলা জায়গায় হয়তো খুব একটা সমস্যা হয় না, কিন্তু নগর-সভ্যতায় শব্দ ছড়িয়ে পড়তে পারে না-বলে সমস্যা হয়।’’ বাজির ক্ষতিকর দিক মারাত্মক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক অনিল সাহা। তিনি জানান, শব্দবাজির কারণে কানের সমস্যা, বধিরতা আসতে পারে। রক্তচাপ বৃদ্ধি বা হৃদরোগ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হার্ট, ব্রেনে স্ট্রোক হতে পারে। পেটের সমস্যারও আশঙ্কা থাকে। আতসবাজির অতিরিক্ত আলো রেটিনাতে প্রভাব ফেলে। ক্ষণিকের জন্য অন্ধত্ব আসতে পারে। এ থেকে বায়ুদূষণ হলে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা হতে পারে। নাক দিয়ে জল পড়া, সর্দি-কাশিও হতে পারে। ছোটরাও এই সব সমস্যায় পড়তে পারে।

পুলিশ অবশ্য এ বারও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Promotion Fire Cracker NGO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE