Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নেই প্রচার, থাকে না অ্যাম্বুল্যান্স করুণ দশায় জেলা ফুটবল লিগ

ম্যাচ পিছু বরাদ্দ সাকুল্যে ১৩০০ টাকা। ওই টাকাতেই সারতে হয় দু’দলের ফুটবলারদের টিফিন, মাঠের তিন রেফারির ভাতা এবং মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ম্যাচ পিছু বরাদ্দ সাকুল্যে ১৩০০ টাকা। ওই টাকাতেই সারতে হয় দু’দলের ফুটবলারদের টিফিন, মাঠের তিন রেফারির ভাতা এবং মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের খরচ।

হাওড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা পরিচালিত জেলা ফুটবল লিগের আর্থিক পরিকাঠামোর এটা খণ্ডচিত্র। ফুটবলারদের টিফিন-সহ অন্য খরচ মেটানো গেলেও মাঠে কোনও ফুটবলার আহত হলে অ্যাম্বুল্যান্স, স্ট্রেচার বা কোনও মেডিক্যাল সহায়তা এর মধ্যে নেই। ২২ জন খেলোয়াড়ের ভরসা বলতে বরফ এবং ফার্স্ট এড বক্স। দিনের পর দিন এ ভাবেই চলছে জেলার ফুটবল লিগ।

জেলা ত্রীড়া সংস্থার এক কর্তা জানান, জেলাস্তরের ফুটবলার থেকেই উঠে আসে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো বড় টিমের পাশাপাশি দেশের হয়ে খেলার ফুটবলার। অথচ এমন বেহাল পরিকাঠামোয় কী ভাবে তা সম্ভব!

অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রীড়াক্ষেত্রে যথেষ্ট আথির্ক অনুদানের ব্যবস্থা করেছেন। সংস্কার করা হয়েছে একাধিক স্টেডিয়াম, মাঠের। কিন্তু তৃণমূল স্তরে পরিকাঠামোর বেহাল চিত্রটা যে বদলায়নি তা জানালেন জেলা ত্রীড়া সংস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। জেলার কয়েকটি ক্লাবের কর্তাদের ক্ষোভ, ‘‘মাঠে এক জন দর্শক না থাকলেও ম্যাচ শেষ করতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু ম্যাচে যদি কোনও ফুটবলার গুরুতর চোট পান তখন কী হবে? মাঠে তো অ্যাম্বুল্যান্সই থাকে না।’’

প্রাক্তন ফিফা রেফারি, হাওড়ার মাকড়দহের বাসিন্দা কালিদাস মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘ফুটবল আইন বলছে মাঠে অ্যাম্বুল্যান্স না থাকলে রেফারি খেলা শুরু করতে পারেন না।’’ প্রথম ডিভিশনের দল ডোমজুড় ইয়ং মেনস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স তো অনেক বেশি হয়ে গেল। কয়েকটি মাঠে খেলতে গিয়ে খাওয়ার জল পর্যন্ত পাওয়া যায় না।’’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা স্বীকার করেছেন তাঁরা সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তাঁদের দাবি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে যে ক্লাবের মাঠে খেলা হচ্ছে সেই ক্লাবের কর্তারা নিজেদের উদ্যোগে মাঠে অ্যাম্বুল্যান্স রাখেন। হাওড়া কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে খেলা থাকলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স থাকে।

হাওড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে খবর, রেফারির ভাতা, মাঠের রক্ষণাবেক্ষণ, ফুটবলারদের টিফিন মিলিয়ে লিগের ম্যাচ পিছু ১৩০০ টাকা ছাড়াও লিগের সব ম্যাচ খেললে দল পিছু এককালীন ১০০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে প্রতি ম্যাচে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া নেওয়া এবং হোর্ডিং, পোস্টার দেওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি তাদের নেই।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য ক্রীড়া দফতর থেকে তেমন সাহায্য মেলে না। ভরসা বিধায়ক তহবিল এবং অনুদান। লিগের স্পনসরের জন্য কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক কথা হলেও বিষয়টি আর এগোয়নি। তবে সুপার ডিভিশনের সব ম্যাচে অ্যাম্বুল্যান্স রাখার চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football League
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE