Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ভারী যান আর নয় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুতে

মাত্র ৩০ বছরেই সেতুটি যে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত, তা ঘোষণা করেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ররা।

বেহাল ঈশ্বরগুপ্ত সেতু। —ফাইল চিত্র।

বেহাল ঈশ্বরগুপ্ত সেতু। —ফাইল চিত্র।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৩
Share: Save:

এখনও তাকে বাতিল করা হয়নি। তবে, নদিয়ার কল্যাণীর সঙ্গে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার সংযোগকারী ঈশ্বরগুপ্ত সেতু দিয়ে ভারী যান হয়তো আর কখনওই চলবে না। মাত্র ৩০ বছরেই সেতুটি যে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত, তা ঘোষণা করেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ররা।

এক মাস ধরে সেতুটি বন্ধ রয়েছে। আরও মাসখানেক পরে খুলে দেওয়া হতে পারে সেতুটি। তবে, তাতে ছোট এবং মাঝারি যানই চলতে দেওয়া হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রের খবর। পূর্ত দফতরের হুগলি জেলার চিফ ইঞ্জিনিয়র দেবব্রত চৌধুরী সম্প্রতি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন, ওই সেতু দিয়ে ফের যান চলাচল শুরু করতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, সেতুতে এখন কিছু কংক্রিটের কাজ চলছে। তবে, সেতুতে ভারী যান চলাচল প্রশাসনকে কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলেও তিনি সুপারিশ করেছেন। না হলে ওই সেতু ফের অকেজো হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পুরনো সেতুর স্বাস্থ্যোদ্ধার যে আর সম্ভব নয়, তা সরকারি ভাবে ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। গত বছরের মার্চে রাজ্য ঘোষণা করেছে, ওই সেতুর পাশে একটি ছয় লেনের আধুনিক সেতু তৈরি করা হবে। খুব দ্রুত সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে। কিন্তু যতদিন নতুন সেতু না-হচ্ছে, ততদিন পুরনো সেতুই ভরসা।

দু’বছর আগে সেতুর স্তম্ভে ফাটল ধরা পড়ার পর থেকে বারবার বন্ধ রাখতে হয়েছে যান চলাচল। মাসখানেক আগে ফের ফাটল ধরা পড়ে। তার কয়েকদিন আগেই ওই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল শুরু হয়েছিল। বারবার সেতু বন্ধের জন্য দু’পারের বাণিজ্য তো ধাক্কা খাচ্ছেই, সমস্যায় পড়ছেন দুই জেলার অসংখ্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষও।

হুগলি থেকে বহু রোগী কল্যাণীর দু’টি হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা করাতে আসেন। তাঁদেরও এখন ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। হুগলি এবং বর্ধমান থেকে আনাজ আসে কল্যাণী এবং কাঁচরাপাড়া এলাকায়। ব্যারাকপুর এবং কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলির কাঁচামালও আসে এই সেতু দিয়েই। পণ্যবাহী লরি চলাচল বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে তার প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সেতু চালু না-থাকায় গঙ্গা পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নৌকা এবং ভুটভুটি অবশ্য আছে। কিন্তু সেই ব্যবস্থা তেমন পোক্ত নয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ। কারণ, সেতু চালু থাকলে নদীপথ তেমন ব্যবহার হয় না।

একে ঈশ্বরগুপ্ত সেতু বন্ধ, তার উপর হুগলিতে দিল্লি রোডের শ্রীরামপুরের কাছে তারকেশ্বর শাখার রেল লাইনের উপরের সেতুটি দিয়েও বন্ধ রয়েছে ভারী যান চলাচল। কারণ, ওই সেতুটির আবস্থাও খারাপ। একই সঙ্গে দু’টি সেতু অকেজো হয়ে পড়ায় জেলায় সড়কপথে পণ্য পরিবহণে বড় ধাক্কা এসেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজ্যের ট্রাক-মালিক সংগঠনের কর্তা প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তায় পুলিশি অত্যাচার রয়েছে। তার উপর হুগলিতে মালবাহী ট্রাক পাঠাতে বিস্তর সমস্যা হচ্ছে। ফলে, লরি-ট্রাকে কল-কারখানায় কাঁচামাল পৌঁছনো বা বাজারে আনাজ পাঠানো সব বন্ধ। ছোট লরি বা ভ্যানে পণ্য পরিবহণে খরচ বেশি হচ্ছে।’’

তথ্য সহায়তা: গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ishwar Gupta Setu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE