Advertisement
E-Paper

স্বাচ্ছন্দ্যের আড়ালে বিপদ, টোটো নিয়ে শঙ্কিত পুলিশ

আইনি বৈধতা আদালতের বিচারাধীন। কিন্তু তাতে কী আর আসে যায়! নিয়ম কিংবা আইনের বাঁধন যাই থাকুক, তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধ বিচরণ করাই এখন রেওয়াজ ব্যাটারি চালিত তিন চাকার ছোট যানের। যার নাম টোটো।

শান্তনু ঘোষ ও মণিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০১:২১
হাওড়া-আমতা রোডে চলছে টোটো। নিজস্ব চিত্র।

হাওড়া-আমতা রোডে চলছে টোটো। নিজস্ব চিত্র।

আইনি বৈধতা আদালতের বিচারাধীন। কিন্তু তাতে কী আর আসে যায়!

নিয়ম কিংবা আইনের বাঁধন যাই থাকুক, তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধ বিচরণ করাই এখন রেওয়াজ ব্যাটারি চালিত তিন চাকার ছোট যানের। যার নাম টোটো।

গোটা হাওড়া জেলা জুড়েই এখন রমরমা বাজার এই তিন চাকার গাড়িটির। গ্রামের রাস্তায় আগে ভরসা ছিল সাইকেল ভ্যান, ট্রেকার। সেগুলির জায়গা ক্রমেই দখল করছে টোটো। হাওড়া জেলা পরিবহণ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলা পুলি‌শের গ্রামীণ এলাকায় প্রতি দিন প্রায় ১০ হাজার টোটো চলাচল করে। হাওড়া সিটি পুলিশের এলাকা। সেই সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

জেলা পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘শহরের বেশির ভাগ টোটোকেই পুরসভা কিংবা পুলিশের তরফে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্রামের টোটোগুলির কোনও বৈধতা নেই। সেগুলি কে চালাচ্ছেন এব‌ং কোন রুটে চলছে কেউ জানেন না।’’

গ্রামীণ হাওড়ার কোনা, জগদীশপুর, সলপ, বাঁকড়া থেকে শুরু করে আমতা— প্রায় সব এলাকাতেই এখন টোটোর রমরমা। শুধু গ্রামের মেঠো কিংবা ঢালাই রাস্তাই নয়, তিন চাকার এই ছোট যানটিকে এখন ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও দেখা যাচ্ছে। যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি টোটো এবং ভ্যানোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ৬ মে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে (স্বরাষ্ট্র) উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও তাঁর ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কমিটি আগামী ১০ জুন ডিভিশন বেঞ্চকে জানাবে, বেআইনি টোটো-ভ্যানোর বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই কমিটি কী নির্দেশ দেয় তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে জেলা পরিবহণ দফতর। এই দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আদালতের তৈরি করে দেওয়া কমিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে যা নির্দেশ আসবে সেই মতোই আমরা কাজ করব।’’

হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার মধ্যে বর্তমানে সব থেকে বেশি টোটো চলে আমতায়। আমতা-রসপুর, আমতা-দেওড়া, আমতা-গুজারপুর, আমতা-ফতেপুর সহ বিভিন্ন রুটে সব মিলিয়ে প্রায় ৬০০ টোটো চলাচল করে। দিনের দিন সেই সংখ্যা আরও বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টোটোয় যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বেশি এবং তুলনায় কম সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো যায়। সেই কারণেই তাঁরা ভ্যান, রিকশা, ট্রেকারের থেকে টোটোতে উঠতে পছন্দ করেন। আমতার টোটো চালক অমিয় জানার দাবি, ‘‘আমরা অন্য গাড়ির মতো বিপজ্জনকভাবে বেশি যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করি না। প্রত্যন্ত এলাকায় আমাদের গাড়িতে চেপে যেতেই যাত্রীরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।’’

কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যেই বিপদ লুকিয়ে রয়েছে বলেই দাবি পরিবহণ কর্তাদের। কেননা, টোটোর চাহিদা ক্রমশ বাড়তে থাকায় এখন কুলগোত্রহীন যে কোনও সংস্থাই টোটো বানাচ্ছে। ফলে গাড়ির কাঠামোর গুণগত মান ঠিক থাকছে না। যে কোনও সময় চাকা খুলে যাওয়া কিংবা উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। গ্রামীণ এলাকার টোটোর যেহেতু রেজিস্ট্রেশন নেই, তাই কোনও টোটো দুর্ঘটনা ঘটালে তার মালিকের খোঁজ পাওয়া সমস্যার।

তবে টোটো চালকদের অবশ্য দাবি, দূষণহীন যান হিসেবে এই তিন চাকা গাড়িই ভবিষ্যৎ। তাই টোটোগুলি যাতে বৈধভাবে চলাচল করতে পারে তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

Toto Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy