Advertisement
০২ মে ২০২৪
তালাবন্ধ প্রতীক্ষালয়

খোলা আকাশের নীচে রাত কাটে রোগীর আত্মীয়দের

হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রোগী। অথচ প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে আসা আত্মীয়দের অপেক্ষা করার জায়গা নেই। হাসপাতাল চত্বরেই এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে হয়। এঁদের কথা ভেবেই উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে তৈরি হয়েছিল স্বজন প্রতীক্ষালয়।

হাসপাতাল চত্বরে এভাবেই রাত কাটাতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। ইনসেটে, তালাবন্ধ প্রতীক্ষালয়। ছবি: সুব্রত জানা।

হাসপাতাল চত্বরে এভাবেই রাত কাটাতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। ইনসেটে, তালাবন্ধ প্রতীক্ষালয়। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রোগী। অথচ প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে আসা আত্মীয়দের অপেক্ষা করার জায়গা নেই। হাসপাতাল চত্বরেই এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে হয়। এঁদের কথা ভেবেই উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে তৈরি হয়েছিল স্বজন প্রতীক্ষালয়। কিন্তু তৈরির পর তিন বছর কেটে গেলেও এখনও তা চালুই হয়নি। বাধ্য হয়ে রোগীদের পরিবারের লোকজনকে রাত কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচেই।

তবে তালাবন্ধ প্রতীক্ষালয়ে রোগীদের পরিবারের লোকজনের ঠাঁই না জুটলেও, প্রয়োজনে তালা খুলে সেখানে হাসপাতালের সরকারি অনুষ্ঠান অবাধেই চলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রতীক্ষালয় দেখাশোনার লোক এখনও নিয়োগ হয়নি। তাই সেটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। লোকের ব্যবস্থা হলেই তা চালু করা হবে।

উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক ও বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার হায়দর আজিজি সফি বলেন, ‘‘প্রতীক্ষালয়টি দেখাশোনার লোকের সমস্যা রয়েছে। সেটা দ্রুত মিটিয়ে প্রতীক্ষালয়টি চালুর ব্যবস্থা করব। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হবে।’’

মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের মার্চ মাসে প্রতীক্ষালয়টি তৈরি করে স্বাস্থ্য দফতর। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি দোতলা ভবন তৈরি করা হয়। প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধন করেন উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ। ভবনটিতে ডায়ালিসিস ইউনিট-সহ কয়েকটি ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়, ভবনের নীচের একটি বড় হলঘরে রোগীর আত্মীয়দের জন্য থাকবে। সেখানে তাঁরা যেমন নিরাপদে রাত কাটাতে পারবেন, তেমনি দিনেও বিশ্রাম নিতে পারবেন।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভবনটিতে ডায়ালিসিস ইউনিট-সহ কয়েকটি বিভাগ চালু হয়ে গেলেও এখনও রোগীর বাড়ির লোকজনের জন্য প্রতীক্ষালয়টি চালু হয়নি। এর ফলে প্রতিদিনই অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের। বাধ্য হয়ে রোদ-বৃষ্টি এড়াতে কখনও হাসপাতালের বারান্দায়, কখনও বর্হির্বিভাগের ছাউনির নীচে ভিড় করছেন। রাতের অবস্থা আরও করুণ। হাসপাতাল চত্বরেই খোলা আকাশের নীচে মশারি খাটিয়ে থাকতে হচ্ছে রোগীর বাড়ির লোকজনকে।

স্বাভাবিক ভাবেই এ সব নিয়ে রোগীর সঙ্গে আলা লোকজন যে ক্ষুব্ধ তাও দেখা গেল। আমতার বাসিন্দা গোবিন্দ সরকার হাসপাতালে ছিলেন তাঁর এক আত্মীয় সেখানে ভর্তি রয়েছেন বলে। তিনি বলেন, ‘‘একে রোগীকে নিয়ে চিন্তা। তার উপর মাথার উপরে চড়া রোদ, বৃষ্টির সমস্যা। কোথাও যে বসব সেই জায়গা নেই। অথচ রোগীর আত্মীয়দের জন্য তৈরি প্রতীক্ষালয় তালাবন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

patients hospital waiting room
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE