Advertisement
০৬ মে ২০২৪

খানাকুলে নৌকাডুবি, ভাঙল বাঁধ

এ দিন সকালে খানাকুলের ছত্রশালে নৌকাডুবি হয়ে মৃত্যু হয় কাজল বেরা (৪৫) নামে এক মহিলার। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) জওয়ানরা বাকি যাত্রীদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

জলস্রোত: আরামবাগ-কলকাতা যাওয়ার রাস্তার উপর দিয়ে বইছে জল। পুরশুড়া বিডিও অফিসের সামনে। ছবি: দীপঙ্কর দে

জলস্রোত: আরামবাগ-কলকাতা যাওয়ার রাস্তার উপর দিয়ে বইছে জল। পুরশুড়া বিডিও অফিসের সামনে। ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৫
Share: Save:

নৌকা ডুবে একজনের মৃত্যু হল জলমগ্ন আরামবাগে। শুক্রবার নতুন করে বাঁধ ভাঙল দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর বিভিন্ন এলাকায়। উঠল ত্রাণ নিয়ে অভিযোগও।

এ দিন সকালে খানাকুলের ছত্রশালে নৌকাডুবি হয়ে মৃত্যু হয় কাজল বেরা (৪৫) নামে এক মহিলার। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) জওয়ানরা বাকি যাত্রীদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এনডিআরএফের সক্রিয়তায় বাকি যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।” যদিও ওই নৌকার যাত্রীদের দাবি, এনডিআরএফ দেরিতে উদ্ধার কাজে এসেছিল।

ডিভিসির ছাড়া জলে হুগলির বাকি এলাকা থেকে খানাকুলের ছত্রশাল গ্রাম প্রায় বিছিন্ন হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই গ্রামের বাসিন্দারা অন্য পাড়ে যাওয়ার জন্য হরিণাখালি নদীর ঘাটে ভিড় করেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুই পাড়ের মধ্যে সংযোগকারী কাঠের সাঁকোটি ভেসে যায়। তাই শুক্রবার ভোর থেকে নৌকা চলাচল শুরু হয়েছিল। জলের অতিরিক্ত স্রোতে নৌকোর ভারসাম্য রাখতে দুই পাড়ে দড়ি বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। দড়ি ছিঁড়ে এ দিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ ডুবে যায় একটি নৌকো। তার পর আর নৌকো চলেনি।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত নৌকোটির মাঝি প্রফুল্ল ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করার জন্যই নৌকা উল্টে যায়।’’ যাত্রীদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। প্রদ্যুৎ ভৌমিক নামে এক যাত্রী বলেন, “নৌকো উল্টে যাওয়ার পরে নদীর পাশে বাঁশঝাড়ে আটকে ছিলাম। প্রবল স্রোতে মনে হচ্ছিল, সেই ঝাড়টাও উপড়ে যাবে।’’

জলমগ্ন: জলে ডুবে রয়েছে পুরশুড়ার বাউনপাড়া। নিজস্ব চিত্র

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পুরশুড়ার মির্জাপুরে দামোদর নদের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৮টি পঞ্চায়েতের ৫০টি মৌজা। এ দিন রাত পর্যন্ত ওই মৌজাগুলির বেশিরভাগ এলাকার বাড়ির একতলা মাপে জল দাঁড়িয়ে ছিল। শুক্রবার রাত পর্যন্ত আরামবাগ ও খানাকুলে দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর পাশে কমবেশি ২০টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। এ দিন পুরশুড়ার মির্জাপুর সংলগ্ন এলাকা থেকে ১২১ জন জলবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।

শুক্রবার আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ তোলেন দুর্গতদের একাংশ। এ দিন সকালে ত্রাণের দাবিতে পুরশুড়া ব্লকে বিক্ষোভ দেখান অনেকে। তাঁদের দাবি, সব জায়গায় সঠিক পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী যাচ্ছে না। যদিও জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল জানান, দুর্গত এলাকায় আরও বেশি সংখ্যায় এনডিএরএফ এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। নতুন করে ৪০ হাজার ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

boat Flood Death Dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE