Advertisement
E-Paper

উলুবেড়িয়ায় রাসায়নিক-ভয়

এলাকা কার্যত সুনসান। শুধু মুখোশ পরে কাজ করছিলেন দমকলকর্মীরা। বার বার চোখ কচলাচ্ছিলেন পুলিশকর্মীরাও। রুমাল ভিজিয়ে চোখ ঢাকছিলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৬
যুদ্ধ: জল দিয়ে রাসায়নিক নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে দমকল বাহিনী।  ছবি: সুব্রত জানা

যুদ্ধ: জল দিয়ে রাসায়নিক নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে দমকল বাহিনী। ছবি: সুব্রত জানা

কাছে গেলেই নাকে আসছিল ঝাঁঝালো গন্ধ। জ্বালা করছিল চোখ।

এলাকা কার্যত সুনসান। শুধু মুখোশ পরে কাজ করছিলেন দমকলকর্মীরা। বার বার চোখ কচলাচ্ছিলেন পুলিশকর্মীরাও। রুমাল ভিজিয়ে চোখ ঢাকছিলেন তাঁরা।

রবিবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার পিরতলার পালোড়া গ্রামের একটি গুদাম থেকে ড্রামে ভর্তি রাসায়নিক ‘লিক’ করায় বিস্তীর্ণ এলাকা ভরে যায় কটূ গন্ধে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসী। পালোড়া মোল্লাপাড়ার কয়েকশো মানুষ অন্যত্র চলে যান। মুম্বই রোডের গাড়ির যাত্রীরাও নাক ঢেকে যাতায়াত করেছেন।

খবর পেয়ে উলুবেড়িয়া থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। পরে আলমপুর থেকে দমকলের আরও একটি ইঞ্জিন আসে। দমকলকর্মীরা প্রথমে জল দিয়ে পুরো এলাকা ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ওই চেষ্টার পরে বিকল্প পথ নেন তাঁরা। ছড়িয়ে থাকা রাসায়নিকের উপরে বালি চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। বিকেল ৩টে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ওই রাসায়নিক মজুতের জন্য শেখ সোহরাবুদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানান, কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোহরাবুদ্দিন ওই রাসায়নিক এনেছিলেন, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ ও দমকল কর্তাদের দাবি, সোহরাব তাঁদের জানিয়েছেন, রাসায়নিকটি আঠা তৈরির কাজে লাগে। কিছুদিন ধরে কয়েকটি ড্রাম ভর্তি রাসায়নিক এখানে রাখা ছিল। কিন্তু এই ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক রাখার জন্য যে সাবধানতা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল তা এ ক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি। তার ফলেই দুর্ঘটনা বলে পুল‌িশ ও দমকল কর্তাদের অনুমান। রাসায়নিকটি ঠিক কী, তা জ‌ানতে নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে বলে তাঁরা জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে বাতিল জিনিসপত্র কিনে এনে সাফসুতরো করে ফের তা বিক্রির জন্য মজুত করা হয় মুম্বই রোডের ধারের ওই গুদামে। গুদামের মালিক শেখ আলতাব এলাকারই বাসিন্দা। গুদামের অনেকটা জায়গা ফাঁকা থাকায় ভাড়া নেন সোহরাবুদ্দিন। সেখানেই ড্রামভর্তি রাসায়নিক রেখেছিলেন তিনি। অন্য এক ব্যবসায়ীর কাছে ওই রাসায়নিক তাঁর পাঠানোর কথা ছিল। এ দিন দুর্ঘটনার পরেই আলতাব পালিয়ে যান।

শেখ জুলফিকার নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘বেলা ১১টা নাগাদ কটূ ঝাঁঝালো গন্ধ পাই। চোখ জ্বালা করছিল। তখনই বুঝতে পারি, বিপজ্জনক কিছু ঘটেছে। বাড়ির মহিলা ও ছোটদের আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি।’’

Panic Chemical Smell Uluberia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy